"রাজ্যসভার কোনও চেয়ারম্যানকে এমন রাজনৈতিক মন্তব্য করতে দেখিনি" - জগদীপ ধনখড়ের সমালোচনায় কপিল সিব্বাল

People's Reporter: শুনানিতে শীর্ষ আদালত বলেছিল, রাজ্যপালের পাঠানো বিল নিয়ে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে।
জগদীপ ধনখড়
জগদীপ ধনখড়ফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

সম্প্রতি একটি রায়কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টকে কাঠগড়ায় তুলে বক্তব্য রেখেছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। তাঁর সেই মন্তব্যের পর বিরোধী রাজনৈতিক দল ও আইনজীবীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। অভিযোগ, এর আগে কোনও উপরাষ্ট্রপতিকে এই ধরণের মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। উপরাষ্ট্রপতির মতো একটি আলঙ্কারিক পদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছেন তিনি।

উপরাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যের পর তাঁর এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধনখড়ের ভূমিকাকে 'সংবিধান বিরোধী' বলেছেন প্রাক্তন আইনমন্ত্রী ও রাজ্যসভার নির্দল সদস্য কপিল সিব্বল। প্রবীণ আইনজীবীর দাবি, ‘‘সরকারি প্রশাসন তার কাজ ঠিক মতো না করলে বিচারবিভাগকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। সেটা তার অধিকার। বিচারবি‌ভাগের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের জন্য জরুরি। রাষ্ট্রপতি পদ এক আলঙ্কারিক পদ। তিনি মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করেন। তাঁর ব্যক্তিগত কোনও ক্ষমতা নেই। আর রাজ্যসভার কোনও চেয়ারম্যানকেও এমন রাজনৈতিক মন্তব্য করতে দেখিনি। আমি অবাক, দুঃখিতও”।

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরাও। সিপিআইএমের দাবি, এই রায় রাজ্যগুলির অধিকারের পক্ষে লড়াইকে জোরদার করার সুযোগ দেবে। এমনকি তামিলনাড়ুর মতো একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে কেরালার বাম সরকার। তারাও অভিযোগ তুলেছে। কেরালার সরকারও রাজ্যপালের সম্মতির অভাবে বিল আটকে থাকার সমস্যায় ভুগছে।

অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী সলমন খুরশিদ বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায় চূড়ান্ত। তাতে কোনও আপত্তি থাকলে পর্যালোচনার জন্য আবেদন করা যায়। কিন্তু সেই রায় পক্ষে না গেলেও মানতে হবে”।

জগদীপ ধনখড়ের মন্তব্যের বিরোধিতা করে কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এক এক্স হ্যান্ডেল পোষ্টে উপরাষ্ট্রপতিকে ট্যাগ করে জানিয়েছেন - "আমাদের গণতন্ত্রে, কেবলমাত্র ভারতের সংবিধানই সর্বোচ্চ এবং সর্বোচ্চ। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা রাজ্যপালের কোনও পদই এত উঁচু নয় যা সাংবিধানিক মর্যাদার শৃঙ্খলের ঊর্ধ্বে।"

তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন রবি বিধানসভায় পাশ হওয়া দশটি বিল আটকে রেখেছেন। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সেরাজ্যের ক্ষমতাসীন ডিএমকে সরকার। যার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানায়, রাজ্য বিধানসভায় কোনও পাশ হওয়া বিলের ক্ষেত্রে এক মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাজ্যপালকে। এমনকি রাষ্ট্রপতিকেও তিন মাসের মধ্যে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

শীর্ষ আদালতের এই রায় নিয়েই আক্রমণের পথে হেঁটেছিলেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, সংবিধানের ১৪২তম অনুচ্ছেদে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ ক্ষমতা ‘পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র’-র সমান হয়ে উঠেছে। উপরাষ্ট্রপতি প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার কি সুপ্রিম কোর্টের রয়েছে?

ধনখড়ের প্রশ্ন, “কোন পথে এগোচ্ছে আমাদের দেশ। এ দেশে হচ্ছেটা কী? আমরা গণতন্ত্রের সঙ্গে কোনওদিন আপোষ করিনি। আজকের দিনটা দেখার জন্য তো এত সংগ্রাম করিনি। এখন দেখা যাচ্ছে, ভারতের রাষ্ট্রপতিকেও একটা বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এটা তো আর সামান্য কিছু নিয়ে মতামত দেওয়া নয়”।

জগদীপ ধনখড়
UPI: ২০০০ টাকার বেশি ইউপিআই লেনদেনে ১৮% জিএসটি? কী জানাল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক
জগদীপ ধনখড়
Anurag Kashyap: 'ব্রাহ্মণ' মন্তব্যের পরেই পরিবারের মেয়েদের ধর্ষণের হুমকি! ক্ষমা চেয়ে নিলেন অনুরাগ

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in