
ব্রাহ্মণদের নিয়ে 'বিতর্কিত' মন্তব্য করে অবশেষে ক্ষমা চেয়ে নিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যপ। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ওই মন্তব্যের পর থেকেই সমাজমাধ্যমে তাঁর মেয়ে, পরিবারের অন্যান্য মহিলাদের ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যখন একজন পরিচালক ইতিহাসের আয়নায় সমাজকে নিজের মুখ দেখতে বলেন, তখন তা অনেকের পছন্দ হয় না। “ফুলে” সিনেমা ঘিরে চলমান বিতর্কে ঠিক এমনটাই ঘটেছে।
'ফুলে' সিনেমার সেন্সরশিপ ইস্যুতে সিবিএফসি এবং ব্রাহ্মণদের কড়া সমালোচনা করেন অনুরাগ কাশ্যপ। ব্রাহ্মণদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যও করেন তিনি। যদিও পরে নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে সেই মন্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমা চান।
কাশ্যপ জানান, "আমি আমার পোস্টের জন্য ক্ষমা চাইছি না। বরং বিষয় বহির্ভূত একটি লাইন এবং ঘৃণার জন্য ক্ষমা চাইছি। কোনও বক্তব্যের জন্য নিজের মেয়ে বা সহকর্মীদের ধর্ষণ ও খুনের হুমকি কাম্য নয়"।
তিনি আরও লেখেন, "যেটা বলে ফেলেছি সেই কথা আর ফেরত নেওয়া যাবে না। তাই আমাকে কটূক্তি বা আক্রমণ করলে করো। আমার পরিবার কিছু বলেনি, আর বলেও না এবং তাঁরা কিছু করেওনি। এর জন্য যদি আমাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয় তাহলে আমি ক্ষমা চাইছি। মহিলাদের সম্মানের কথা তো শাস্ত্রতেও লেখা আছে, শুধু মনুবাদে লেখা নেই। এবার আপনারা কীরকম ব্রাহ্মণ তা আপনারাই ঠিক করুন"।
অনুরাগ কাশ্যপের সাম্প্রতিক একটি পোস্ট ঘিরে এই বিতর্কের সূত্রপাত। অনুরাগের করা একটি পোস্টে একজন মন্তব্য করে লেখেন, 'ব্রাহ্মণরা আপনার বাবা'। এর জবাবে অনুরাগ লেখেন, 'ব্রাহ্মণদের উপর আমি প্রস্রাব করি, কোনও সমস্যা?' এরপরই অনুরাগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় ব্রাহ্মণ সমাজ।
শুক্রবার তাঁর বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশের কাছে এফআইআর দায়েরের আর্জি জানান এক আইনজীবী। এক্স মাধ্যমে ওই আইনজীবী জানান, আমি সম্মানের সাথে মুম্বই পুলিশকে অনুরোধ জানাচ্ছি, অনুরাগ কাশ্যপের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যদি কোনও ব্যক্তির কোনও পদক্ষেপ বা বক্তব্য সাধারণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর হয়, তাহলে সমাজের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে।
সমাজ সংস্কারক জ্যোতিরাও ফুলে ও তাঁর স্ত্রী সাবিত্রীবাই ফুলের সংগ্রামী জীবনের উপর ভিত্তি করে অনন্ত মহাদেবন নির্মিত 'ফুলে' ছবিটি যেমন এক বাস্তব গল্প বলে, তেমনি সমাজের গভীরে লুকিয়ে থাকা জাতি, শ্রেণি ও পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আর সেই প্রশ্নই যেন হয়ে উঠেছে বিতর্কের জন্মস্থল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন