
প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। আবেদনকারী আইনজীবী বিকাশ তিওয়ারি জানিয়েছেন, মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহী স্নান’-এ আসা পুণ্যার্থীদের জন্য ‘নিরাপদ পরিবেশ’ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। যা সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের ‘সাম্য ও জীবনের মৌলিক অধিকার রক্ষা’র পরিপন্থী। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে এই ধরণের দুর্ঘটনা এড়াতে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলোকে কড়া নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকেই কোটি মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেন প্রয়াগরাজে। মাঝরাত থেকেই গঙ্গা, যমুনা, এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী - তিন নদীর সঙ্গম ত্রিবেণী সঙ্গমে শাহী স্নান বা অমৃত স্নান করা শুরু করে দেন তাঁরা। রাত ২টা নাগাদ অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে স্নানের ঘাটে থাকা ব্যারিকেডগুলি ভেঙে যায়। তখনই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। সরকারি মতে, ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ৬০ জন। পাশাপাশি বহু মানুষ তাঁদের পরিবারের থাকে আলাদাও হয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
আইনজীবীর অভিযোগ, সরকারি অবহেলার কারণেই ৩০ জনের মৃত্যু ঘটেছে এবং এতো মানুষ আহত হয়েছেন। এমনকি মহাকুম্ভ মেলা শুরুর কয়েক মাস আগে থেকে যোগী এবং তাঁর সরকারের মন্ত্রী ও অধিকারিকদের দাবি করা ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট’-এর ত্বত্ত্ব মুখ থুবড়ে পড়েছে।
মৌনী অমাবস্যায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে যোগী সরকারের পুলিশ, র্যাফের পাশাপাশি ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর সিআইএসএফ। যা নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক। কিন্তু এত কিছুর পরেও ঘটেছে পদপিষ্টের ঘটনা। শীর্ষ আদালতে মামলাকারীর অভিযোগ, পূর্বের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনও ‘সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা’ ছিল না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারের।
অন্যদিকে, পদপিষ্টের ঘটনার একদিনের মাথায় ফের বিপত্তি মহাকুম্ভ মেলায়। জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কুম্ভমেলার সেক্টর ২২-এর একটি তাঁবুতে আগুন লাগে। সেই আগুন ছড়িয়ে জুনা আখড়ার ১৫ টি তাঁবু পুড়ে গিয়েছে। দমকল কর্মীরা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, রাস্তা না থাকায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সমস্যা হয়েছে তাঁদের। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মেলায় ৫০ টি অগ্নি নির্বাপণ কেন্দ্র রয়েছে। ২০০০ কর্মী দিন-রাত কাজ করছে। এছাড়া দমকলের ৩৫০ টি ইঞ্জিনও রয়েছে। বার বার কুম্ভমেলায় বিপত্তির কারণে প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন