

মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনা ঘটল প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভ মেলায়। মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহী স্নান’ –এর জন্য ত্রিবেণী সঙ্গম ঘাটে ভিড় জমিয়েছিলেন কোটি কোটি মানুষ। আর তাতেই তৈরি হয় পদপিষ্টের পরিস্থিতি। ব্যারিকেড ভেঙে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের। আহত শতাধিক। তবে এই প্রথম নয়, বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ মহাকুম্ভ মেলা, অতীতেও পদপিষ্টের ঘটনার সাক্ষী থেকেছে।
১৯৫৪ সাল: কুম্ভমেলার ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে ১৯৫৪ সালে। স্বাধীনতার পর সরকার প্রথম কুম্ভমেলার আয়োজন করেছিল। সে বছর ৩ ফেব্রুয়ারি এলাহবাদে (বর্তমানে যা প্রয়াগরাজ হিসাবে পরিচিত) মৌনী অমবসা উপলক্ষ্যে জমায়েত হয়েছিলেন বহু মানুষ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে এবং নদীর জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৮০০ জনের।
১৯৮৬ সাল: এরপর ১৯৮৬ সালেও ঘটেছে পদপিষ্টের ঘটনা। সে বছর কুম্ভমেলার আয়োজন হয় হরিদ্বারে। সেই বছর কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ২০০ জন। জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর সিং-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সংসদেরা সেদিন কুম্ভমেলায় এসেছিলেন স্নান করতে। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য সাধারণ মানুষ নদীর তীরে পৌঁছাতে বাধা পান। আর তাতেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে তৈরি হয়েছিল পদপিষ্টের পরিস্থিতি।
২০০৩ সাল: দীর্ঘ সময় পর ২০০৩ সালে নাসিকে কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সে বছর কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ৩৯ জন। আহত হয়েছিলেন শতাধিক।
২০১০ সাল: এরপর ২০১০ সালে কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। সে বছর হরিদ্বারে আয়োজন করা হয় কুম্ভমেলার। ১৪ এপ্রিল ‘শাহী স্নান’ –এর সময় সাধুসন্তদের সঙ্গে সাধারণ পুণ্যার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। আর তাতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিলে। জানা যায়, সাত জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০১৩ সাল: এর ঠিক তিন বছর পর ২০১৩ সালে প্রয়াগরাজে ঘটেছিল পদপিষ্টের ঘটনা। তবে সে বার মেলাপ্রাঙ্গণে নয়, পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল এলাহবাদ স্টেশনে। ফুট ব্রিজের রেলিং ভেঙে পড়ায় স্টেশনে থাকা যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি বেঁধে যায়। জানা যায়, সেবার ৪২ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন পদপিষ্টের ঘটনায়। আহত হয়েছিলেন অন্তত ৪৫ জন।
২০২৫ সাল: ২০১৩ সালের পর ২০২৫ সালে প্রয়াগরাজে ঘটল পদপিষ্টের ঘটনা। গত ১৩ জানুয়ারি থেকে প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে ‘শাহী স্নান’ করার জন্য বুধবার ভোরে ত্রিবেণী সঙ্গমে কোটি কোটি মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশী বহু পুন্যার্থী। তাঁদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। নিখোঁজ হয়েছেন বহু মানুষ।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন