
গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে জেডিএসের প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি প্রজ্বল রেভান্নাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বেঙ্গালুরুর এমপি/এমএলএ আদালত। শুক্রবারই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত।
হোলেনারসিপুরায় রেভান্নার পরিবারের মালিকানাধীন ফার্মহাউসে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করা এক মহিলা অভিযোগ করেছিলেন, রেভান্না ২০২১ সাল থেকে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করছেন। এমনকি সেই সময়ের ছবি ও ভিডিয়োও তুলে রাখা হয়। ধর্ষণের কথা কাউকে জানালে ভিডিও ও ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন রেভান্না। ১৮ জুলাই এই মামলার শুনানি শেষ হয়। ৩০ জুলাই পর্যন্ত রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত। এরপর শনিবার এই মামলার সাজা ঘোষণা করল আদালত।
গত বছর ৩১ মে দেশে ফিরতেই বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে রেভান্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা চলাকালীন ২৬ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর রেভান্নার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌনকর্ম, অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন এবং অন্তরঙ্গ ছবি বেআইনিভাবে প্রচার সহ বিভিন্ন ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। এছাড়াও গত বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে ১০ জুনের মধ্যবর্তী সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিন সাজা ঘোষণার আগে আদালত কক্ষে কান্নায় ভেঙে পড়েন রেভান্না। তিনি বলেন, "নির্বাচনের সময়ই কেন এই মামলাটি প্রকাশ্যে এল? যখন আমি একজন সাংসদ ছিলাম, তখন আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তারা এখন বলছেন যে আমি একাধিক যৌন নির্যাতন করেছি। তখন কেউ কেন এগিয়ে আসেনি? কেন কেবল নির্বাচনের সময় মামলাটি সামনে এসেছিল?"
যৌন নির্যাতন এবং তার ভিডিওগুলো ভাইরাল করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধির দুটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, আরও পাঁচটি ধারায় দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত রেভান্নাকে। এমনকি, নির্যাতিতাকে ১১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে হাসন কেন্দ্রে জেডিএসের টিকিটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন প্রজ্বল। ২০২৪ সালেও প্রার্থী হন তিনি। তাঁর হয়ে ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কিন্তু ভোটের আগেই একটি পেনড্রাইভ প্রকাশ্যে আসে। যেখানে প্রজ্বলের শতাধিক যৌন হেনস্থার ভিডিয়ো ছিল বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির চাপে প্রজ্বলকে দল থেকে সাসপেন্ড করে জেডিএস। এরপর ভারত ছেড়ে জার্মানি পালিয়ে যান তিনি। পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ায় জেডিএস শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে চাপ বাড়ান দলের একাংশ নেতা-কর্মী। নাতিকে দেশে ফেরার জন্য বার্তা দেন জেডিএস প্রধান এইচ ডি দেবগৌড়াও। ৩১ মে দেশে ফিরতে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন