
বৃহস্পতিবার ইন্ডিগো বিমানে শারীরিক হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন এক বাংলাভাষী মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিক। ওই বিমানে মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে শিলচর ফিরছিলেন হোসেন আহমেদ মজুমদার নামের ৩২ বছরের ওই যুবক। পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিবারের তরফ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়েছে, হোসেনকে আনতে বিমানবন্দরে যায় তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য। কিন্তু তিনি আসেননি। ফোনে তাঁর সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সেই সময় এই হেনস্থার কথা পরিবার জানত না। পরে ভাইরাল ভিডিও দেখে হোসেনকে চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে কর্মরত হোসেন অতীতে একাধিকবার এই রুটে বাড়ি ফিরেছিলেন।
হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ইন্ডিগো বিমান কর্তৃপক্ষ তাঁর অবস্থান সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতে পারেনি। তাঁরা বিমানবন্দরে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী (CISF) কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেছেন। এরপর স্থানীয় উধারবন্দ থানায় নিখোঁজ মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ইন্ডিগোর মুম্বাই থেকে কলকাতাগামী একটি বিমানে এই ঘটনা ঘটে। সূত্রের খবর, বিমানে প্যানিক অ্যাটাক হয় হোসেন আহমেদ মজুমদারের। তিনি আসন থেকে উঠে পায়চারি করছিলেন। সেই সময় সিটে বসা এক মধ্য বয়সি পুরুষ যাত্রী তাঁকে চড় মারেন। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্যানিক অ্যাটাক হওয়া হোসেনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন বিমানসেবিকারা। তখন এক পুরুষ যাত্রী তাঁকে চড় মারেন। পাশে বসা যাত্রীদের মধ্যে দু'জন যাত্রী এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান। একজন যাত্রী মারমুখী যাত্রীকে বলছেন কেন মারলেন? তখন ওই যাত্রী জবাবে বলেন, 'আমার অসুবিধা হচ্ছে'। যদিও কী অসুবিধা তা বোঝা যায়নি। বিমানসেবিকারাও প্রশ্ন করেন ওই যাত্রীকে। এরপর ওই যাত্রীর হাত কাছ থেকে আক্রান্ত যাত্রীকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে সিটে বসিয়ে দেন তাঁরা।
এই ঘটনায় ইন্ডিগো বিমান কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, "আমাদের একটি বিমানের মধ্যে একটি শারীরিক হেনস্থার খবর পেয়েছি আমরা। আমাদের ক্রুরা প্রতিষ্ঠিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) অনুসারে কাজ করেছে। বিমান গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর পরই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রোটোকল অনুসারে, তত্ত্বাবধায়ক সংস্থাকে যথাযথভাবে অবহিত করা হয়েছে"। বিবৃতিতে চড় মারা ব্যক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
শারীরিক আক্রমণের ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। অন্যদিকে, ছেলে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। হোসেন কোথায় আছেন, কেউ বলতে পারছেন না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন