
চার দশক পর সাজা ঘোষণা। ইন্দিরা গান্ধীর হত্যা পরবর্তী শিখবিরোধী দাঙ্গায় দিল্লিতে এক শিখ ধর্মাবলম্বী পিতা-পুত্রের হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল প্রাক্তন সাংসদ সজ্জন কুমারের। দিল্লির বিশেষ আদালত জানিয়েছে, ১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বরের ওই ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন সজ্জন।
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পর ১৯৮৪ সালে দেশজুড়ে শিখ বিরোধী দাঙ্গা চলেছিল। সেই বছরই ১ নভেম্বর যশবন্ত সিং এবং তাঁর পুত্র তরুণদীপ সিংকে খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় তৎকালীন দিল্লির রাজনগরের কংগ্রেস সাংসদ সজ্জন কুমারের। প্রাথমিকভাবে পাজ্ঞাবি বাগ থানায় মামলা দায়ের করা হলেও, পরবর্তীতে এই মামলার তদন্তের জন্য গঠন করা হয় একটি দল। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আদালত সজ্জনের বিরুদ্ধে খুনের চার্জ গঠন করে।
আদালতে আইনজীবীর দাবি ছিল, প্রধানমন্ত্রী হত্যার পর শিখ বিরোধী দাঙ্গার সময় যশবন্তের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তাঁকে এবং তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়। লুটপাঠ চালানোর অভিযোগও ওঠে। এমনকি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া ওই অঞ্চলে একটি গুরুদ্বার জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। অভিযোগ, এই দু’টি ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সজ্জন। এছাড়া সুলতানপুরের একটি খুনের ঘটনাতেও জড়িত ছিলেন তিনি।
৪১ বছর পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় সজ্জনকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির বিশেষ আদালত। মামলাকারী তথা যশবন্তের স্ত্রী এবং রাষ্ট্রের তরফে সজ্জনের মৃত্যুদণ্ডের আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু আদালত তা খারিজ করে দেয়। সাজা শোনানোর আগে সুপ্রিম কোর্টের নিয়ামানুযায়ী আসামির মানসিক অবস্থার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিহার জেলে বন্দি সজ্জন। সেখান থেকেই সজ্জনের রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় আদালত। সজ্জনের বয়স বর্তমানে ৭৯। বার্ধক্যের কথা বাদ দিলেও জেলে থাকাকালীন তাঁর আচরণ সন্তোষজনক বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। তাই তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন