
জোরপূর্বক মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ, পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বচসা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ। দুই বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং মনোজ তিওয়ারির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল ঝাড়খণ্ড পুলিশ। নিশিকান্ত দুবে ঝাড়খণ্ডেরই গোড্ডার বিজেপি সাংসদ এবং মনোজ তিওয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লির সাংসদ।
শ্রাবণ মাস উপলক্ষ্যে প্রতি সোমবারই পূর্ণ্যার্থীদের ভিড় হচ্ছে ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে বাবা বৈদ্যনাথ মন্দিরে। সেই কারণে এই সময় মন্দিরে ভিআইপি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, ২ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও লোকজন নিয়ে মন্দিরে পুজো দিতে যান নিশিকান্ত ও মনোজ। পুলিশ বাধা দিলে তা উপেক্ষা করে মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে পড়েন দুই বিজেপি সাংসদ। সেই সময় ‘কাঁচা জল পুজো’র রীতি চলছিল ভিতরে।
মন্দিরের প্রধান পুরোহিত কার্তিক নাথ ঠাকুর অভিযোগ করেন, 'কাঁচা জল পুজো' রীতি চলাকালীন আচমকা ভিআইপি প্রবেশে রীতি পালনে সমস্যা তৈরি হয়। আতঙ্কিত হয়েছে পড়েন পূণ্যার্থীরা। এরপরেই ৭ আগস্ট পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। যার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। দুই বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে অনধিকার প্রবেশ, ধর্মীয় উপাসনায় বাধাদান, সরকারি কাজে বাধার মতো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
যদিও এই এফআইআরের নেপথ্যে রাজনীতি দেখছে বিজেপি। নিশিকান্ত দুবে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, "পূজা করা যদি অপরাধ হয় তাহলে আমি নিজেই আত্মসমর্পণ করতে রাজি। আমার বিরুদ্ধে এমনিই ৫১টি মামলা রয়েছে"।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক মামলায় নাম জড়িয়েছে নিশিকান্তের। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নিশিকান্ত-সহ ন'জন বিজেপি সাংসদ জোরপূর্বক দেওঘর বিমানবন্দরের ‘এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল’-এ ঢুকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের হুমকি দিয়ে রাতেই চার্টার্ড বিমান উড়ানের অনুমতি দিতে বাধ্য করেছিলেন। বিমানবন্দরের ডিএসপি সুমন আমনের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।
প্রসঙ্গত, নিশিকান্ত দুবের আনা নোটিশের ভিত্তিতেই ২০২৩ সালে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। এর আগে নিশিকান্তের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া। তিনি তাঁর নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত যে নথিগুলি পেশ করেছিলেন, তার প্রতিলিপি এবং এই সংক্রান্ত নথি টুইটারে পোস্ট করে মহুয়া লিখেছিলেন, নিশিকান্তের পিএইচডি এবং এমবিএ ডিগ্রি জাল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন