
চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শম্ভু ও খানৌরি সীমান্তে একাধিক দাবি নিয়ে অবস্থান চালাচ্ছেন কৃষকরা। নতুন বছরের শুরুতেই আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়াতে চাইছেন কৃষকরা। সেই লক্ষ্যেই আগামী ৪ জানুয়ারি 'কিষাণ মহাপঞ্চায়েতের' ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করছেন কৃষকরা। নিজেদের আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (নন পলিটিক্যাল) এবং কিষাণ মজদুর মোর্চা আগেই ৩০ ডিসেম্বর পাঞ্জাব বনধের ডাক দিয়েছিল। কৃষকদের বনধের জেরে সোমবার কার্যত স্তব্ধ রয়েছে পাঞ্জাব। ২০০-র বেশি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে আছে। বাতিল হয়েছে ২০০টির বেশি ট্রেন। এবার নিজেদের অধিকারের দাবিতে ৪ জানুয়ারি কিষাণ মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। খানৌরি প্রতিবাদ স্থলেই এই মহাপঞ্চায়েত আয়োজিত হবে।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা কাকা সিং কোটরা জানান, ৭০ বছর বয়সী কৃষক নেতা (জগজিত সিং ডালেওয়াল) অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে রয়েছেন। শনিবার যা ৩৩তম দিনে পড়েছে। আগামী ৪ জানুয়ারি খানৌরিতে মহাপঞ্চায়েত হবে। যেখানে বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকরা অংশগ্রহণ করবেন। জানা যাচ্ছে, ওই মহাপঞ্চায়েতে বক্তব্য রাখবেন জগজিত সিং ডালেওয়াল।
প্রসঙ্গত, শনিবার সুপ্রিম কোর্ট অনশনরত কৃষক নেতা জগজিত সিং ডালেওয়ালকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেয়। দেশের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, কৃষক নেতাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত না করা হলে সেক্ষেত্রে পাঞ্জাবের মুখ্যসচিব কে এ পি সিনহা এবং পাঞ্জাবের ডিজিপি গৌরব যাদবকে আদালত অবমাননার দায় নিতে হবে। কৃষক নেতা ডালেওয়াল গত ২৬ নভেম্বর থেকে কৃষকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে অনশন করছেন খানৌরি সীমান্ত অঞ্চলে। এর আগে আদালত জানিয়েছিল, ডালেওয়ালের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পাঞ্জাব সরকারের।
যদিও পাঞ্জাব সরকার জানিয়েছিল, ডালেওয়ালকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে তাঁর সাথে থাকা অন্যান্য কৃষকরা বাধা দিচ্ছেন। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। সেই কারণে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত ওই কৃষক নেতা কোনও চিকিৎসা গ্রহণ করেননি। পাশাপাশি অনশনরত কৃষকনেতার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার জন্য চিকিৎসকদের একটি দল গঠন করেছে পাঞ্জাব সরকার। জানা গেছে, এদিন সেই চিকিৎসক দল ডালেওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে এলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
আদালতে পাঞ্জাব সরকার যা দাবি করেছিল তা 'মিথ্যা' বলে জানিয়েছেন ডালেওয়াল। তিনি জানান, আমাকে এখানে কেউ জোর করে আটকে রাখেনি। কেউ আমার চিকিৎসার জন্য সরকারকে বাধা দিচ্ছে না। আমি নিজে থেকেই সমস্ত কিছু প্রত্যাখ্যান করেছি। এই দেশে ৭ লক্ষ কৃষক ঋণের দায়ে আত্মহত্যা করেছে। কৃষকদের বাঁচাতে হবে। তাই আন্দোলন করছি। কেউ আমাকে জোর করে বসিয়ে রাখেনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন