
পাঞ্জাব সরকারকে অনশনরত কৃষক নেতা জগজিত সিং ডালেওয়ালের চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল শনিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। গত ২৬ নভেম্বর থেকে খানৌরি সীমান্ত অঞ্চলে অনশন করছেন কৃষক নেতা জগজিত সিং ডালেওয়াল। এদিন তাঁর অনশন ৩২ দিনে পড়েছে।
বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ঢুলিয়ার ভ্যাকেশন বেঞ্চে এদিন এই কনটেম্পট পিটিশনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন বিচারপতিদ্বয় আগামীকালের মধ্যে পাঞ্জাব সরকারকে এই বিষয়ে হলফনামা দেবার নির্দেশ দিয়েছে। একই সাথে অনশনরত কৃষক নেতার চিকিৎসার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে উপস্থিত ছিলেন পাঞ্জাবের অ্যাডভোকেট জেনারেল গুরমিন্দর সিং।
এদিন পাঞ্জাব সরকারকে উদ্দেশ্য করে বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি ওখানে আইন শৃঙ্খলাজনিত কোনও সমস্যার সৃষ্টি হয় তা কড়া হাতে দমন করতে হবে। কিন্তু একজনের জীবন সংশয় দেখা দিয়েছে। এই বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। তাঁকে অবশ্যই চিকিৎসা দিতে হবে এবং যা মনে হচ্ছে আপনারা এই বিষয়ে আগ্রহী নন। আগামীকালের শুনানিতে পাঞ্জাব সরকারের মুখ্য সচিব এবং ডিজিপি-কে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭০ বছর বয়সী কৃষক নেতা ডালেওয়াল কৃষকদের একাধিক দাবি নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন। মূলত ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা সহ কৃষকদের অন্যান্য দাবি নিয়েই তাঁর অনশন। এছাড়াও কৃষকদের বিদ্যুতের বিল, কৃষকদের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার, কৃষক এবং ক্ষেতমজুরদের জন্য পেনশন সহ অন্যান্য দাবিও আছে।
এর আগেও বর্ষীয়ান কৃষক নেতার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগের শুনানিতেই আদালতের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার কথা জানানো হয়েছিল। আদালতের নির্দেশের পর পাঞ্জাব পুলিশের প্রধান এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক অনশনস্থলে গিয়ে জগজিত সিং ডালেওয়ালের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।
এর আগে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা-র পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুরমু-র সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষক নেতৃত্ব। ২৫ ডিসেম্বরের ওই চিঠিতে এসকেএম জানিয়েছে, “এসকেএম-এর এক প্রতিনিধিদল আপনার সুবিধামত সময়ে আপনার সাথে সাক্ষাতের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে। দেশজুড়ে কৃষকদের মধ্যে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা এবং ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা সম্পর্কে আমাদের ভাবনাচিন্তা আমরা আপনাকে জানাতে চাই।”
চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে এসকেএম (নন পলিটিক্যাল) এবং কিষাণ মজদুর মোর্চা সহ ১০১টি কৃষক সংগঠনের ডাকে শম্ভু এবং খানৌরি সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থান করছেন কৃষকরা। এখনও পর্যন্ত তিনবার বিক্ষোভরত কৃষকরা দিল্লি প্রবেশের চেষ্টা করলেও তাঁদের বারবার সীমান্তে আটকে দিয়েছে হরিয়ানা পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন