ক’দিন আগেই উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে ভুয়ো দূতাবাসের সন্ধান পাওয়া গেছিল। আর এবার আস্ত পুলিশ থানা, যার পুরোটাই ভুয়ো। এবারেও সেই উত্তরপ্রদেশ। নয়ডার গৌতম বুদ্ধ নগরের পুলিশ রবিবার ‘ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ নামের এক ভুয়ো অফিস থেকে ছ’জনকে গ্রেপ্তার করলো। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা সকলেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গতকাল মাঝরাত থেকে এই অফিসে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং জানা গেছে তাঁদের নাম যথাক্রমে বিভাস চন্দ্র অধিকারী, অর্ঘ্য অধিকারী, বাবুল চন্দ্র মণ্ডল, পিন্টু পাল, শ্যামাপদ মাল এবং আশিস কুমার। এঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত। ধৃত সকলেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা এবং সকলেই একসঙ্গে ওই অফিসে থাকতেন।
পুলিশ আধিকারিকদের সূত্র অনুসারে, এই দলের সঙ্গে যুক্তরা নিজেদের সরকারি অফিসার বলে দাবি করতো। এরা সকলেই ভুয়ো পরিচয়পত্র, ভুয়ো পরিচয়চিহ্ন, ভুয়ো লোগো, জাল তথ্যাদি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো। নয়দার সেক্টর ৭০ থেকে এই ভুয়ো পুলিশ অফিস চালানো হত বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই অফিসে পুলিশ থানার মত রঙ এবং চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও ওই অফিসে মিনিস্ট্রি অফ ট্রাইবাল অ্যাফেয়ারস, মিনিস্ট্রি অফ আয়ুষ, মিনিস্ট্রি অফ সোশ্যাল জাস্টিস প্রভৃতি মন্ত্রকের জাল শংসাপত্র রাখা ছিল।
রবিবার সেন্ট্রাল নয়ডার ডিসিপি শক্তি মোহন অবস্থি সাংবাদিকদের জানান, তল্লাশি চালানোর সময় ওই ভুয়ো অফিস থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রকের ভুয়ো সার্টিফিকেট, ৯টি ভুয়ো পরিচয়পত্র, ৬টি চেক বই, এটিএম কার্ড, ৯টি মোবাইল ফোন এবং ৪২,৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিসিপি অবস্থি আরও জানিয়েছেন, এই দল গত ৪ জুন এই অফিস ভাড়া নেয় এবং গত ১০ দিন ধরে তারা এই অফিস চালাচ্ছিল। এঁরা সমান্তরাল পুলিশ প্রশাসন চালিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিল। পুলিশ সূত্র অনুসারে, এই চক্র নিজেদের সরকারি কর্মচারী সাজিয়ে এক ওয়েবসাইট (www.intlpcrib.in) মারফত বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান তুলত এবং বিশ্বাস অর্জনের জন্য অনলাইনে একাধিক ভুয়ো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শংসাপত্র প্রমাণ হিসেবে দেখাত।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং ছদ্মবেশ ধারণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এখন তাদের কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে এবং রাজ্য জুড়ে অন্যান্য অনুরূপ জালিয়াতির সাথে তাদের যোগসূত্র আছে কিনা তা যাচাই করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন