
রাজ্যগুলোতে বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা। সোমবার লোকসভা অধিবেশনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে তথ্য প্রকাশ করেছেন তা উদ্বেগজনক। তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বর্ষের প্রথম আটমাসে দেশজুড়ে মোট স্কুলছুটের পরিমাণ ১১.৭০ লক্ষ। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। তথ্য অনুযায়ী, ৬-১৪ বছর বয়সী শিশুরা রয়েছে এই স্কুল ছুট তালিকায়।
সোমবার লোকসভাতে একটি লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরী এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। স্কুলছুটদের তালিকায় প্রথমে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। যোগী রাজ্যে গত আটমাসে স্কুলছুট শিশুর সংখ্যা ৭.৮৪ লক্ষ। এরপরেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড। সেখানে সংখ্যাটা হল ৬৫ হাজার। এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে আসাম (৬৩ হাজার)।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, স্কুলছুটের তালিকা নির্ণয় করা হয় দুইভাবে। প্রথমত, যে শিশুরা কোনও দিনও বিদ্যালয়ে যায়নি। এবং দ্বিতীয়ত, স্কুলে ভর্তির পর ৪৫ দিন স্কুলে না গেলে বাদ পড়ে তালিকা থেকে। মন্ত্রীর কথায়, উভয় তালিকাতেই অধিকাংশ ৬-১৪ বছর বয়সী শিশুরা রয়েছে।
স্কুলছুটের সংখ্যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৮ লক্ষ স্কুলছুট শিশুর পরিসংখ্যানটি শুধু আশঙ্কাজনক নয়, বরং সে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার গভীর সঙ্কটের দিকে ইঙ্গিত করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রাজ্যগুলির সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি শুধুমাত্র বৃহৎ পরিকাঠামো প্রকল্প এবং ধর্মীয় বিষয়কেন্দ্রিক। কিন্তু প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, স্কুলছুট শিশুদের পুনরায় স্কুলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগে উত্তরপ্রদেশের মাত্র ৩৫ শতাংশ শিশু নাম নথিভুক্ত করেছে। এই পরিসংখ্যানও যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর প্রধান কারণ হল দারিদ্র্য, অভিভাবকদের অজ্ঞতা এবং স্কুলে শিক্ষার নিম্নমান। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ড ও আসামেও স্কুলছুটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ঝাড়খণ্ডের এই পরিস্থিতি প্রকট।
তবে তথ্য অনুযায়ী, স্কুলছুটের সংখ্যা সবচেয়ে কম সিকিমে। সে রাজ্যে সংখাটা ৭৪। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ২ এবং পুদুচেরিতে ৪। এছাড়া লাদাখ এবং লাক্ষাদ্বীপ-সহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে স্কুলছুটের পরিমাণ শূন্য।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন