
ভোটগণনার পর মাত্র ৪৫ দিন পর্যন্ত ভোটপ্রক্রিয়ার ছবি ও ফুটেজ মজুত রাখা হবে। ওই সময়ের মধ্যে কোনও মামলা না হলে, সমস্ত নষ্ট করে দেওয়া হবে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) পক্ষ থেকে ভোটগ্রহণের ফুটেজ সংরক্ষণ নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ছবি ও ভিডিও ফুটেজের 'অপব্যবহার' রুখতেই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। তবে কমিশনের এই পদক্ষেপকে 'ম্যাচ ফিক্সিং' বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)।
জানা যাচ্ছে, গত ৩০ মে দেশের সমস্ত নির্বাচনী আধিকারিকদের এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৪৫ দিনের মধ্যে মামলা না হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোটগ্রহণের ছবি ও ফুটেজ (Election Footage) নষ্ট করে দিতে হবে। আর যদি মামলা হয় তাহলে কেবলমাত্র ওই নির্দিষ্ট বুথের ফুটেজ রেখে দেওয়া হবে।
কমিশনের যুক্তি, ভোটপ্রক্রিয়ার ফুটেজ সংগ্রহের তেমন কোনও আইন নেই। বরং গোটা প্রক্রিয়াটাই অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপণার অংশ। কমিশন জানিয়েছে, সাম্প্রতিককালে যেভাবে সমাজ মাধ্যমে ভুল ভাষ্য দিয়ে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে, তাতেই তৈরি হচ্ছে বিতর্ক। তাই সেই বিতর্ক রুখতেই এই পদক্ষেপ।
এর আগে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছিল, ছ'মাস পর্যন্ত ভোটপ্রক্রিয়ার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত করা হবে। বস্তুত, এতদিন মনোনয়ন পর্বের ফুটেজ তিন মাস মজুত রাখার নিয়ম ছিল। এছাড়া, ভোটের আগে প্রচার, ভোটগ্রহণ এবং গণনার ছবি ও ভিডিও ছ'মাস থেকে একবছর পর্যন্ত সংরক্ষণের নিয়ম ছিল।
আগে ভিডিও ফুটেজ যে কেউ দেখতে পেতেন। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বরে নির্বাচনী বিধির ৯৩(২) (এ) ধারাও সংশোধন করে কমিশন। এর ফলে এখন আর সেই ফুটেজ সাধারণ মানুষ দেখতে পাবে না। কমিশনের যুক্তি, আগে যেহেতু ব্যালটে ভোট হতো, তাই কাগজ দেখার অধিকার সুরক্ষিত ছিল। কিন্তু পুরনো আইন সংশোধন করে কমিশন জানায়, কাগজ আর ভিডিও এক নয়।
আর কমিশনের এই নয়া নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লোকসভা বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সমাজ মাধ্যমে তাঁর প্রশ্ন, "ভোটার তালিকা? Machine-Readable ফর্ম্যাট দেবে না। CCTV ফুটেজ? আইন পাল্টে গোপন করে দেবে। নির্বাচনের ছবি ও ভিডিও? এক বছর নয়, ৪৫ দিনেই সব মুছে দেবে। যার কাছে জবাব চাওয়া হচ্ছে, সে নিজেই প্রমাণ নষ্ট করে দিচ্ছে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ম্যাচ ফিক্সিং হচ্ছে। গণতন্ত্রে এই ধরনের ম্যাচ ফিক্সিং বিষের সমান"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন