উমর খালিদ, শারজিল ইমাম সহ মোট ন’জনের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লি হাই কোর্ট। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি ছিল। ২০২০ দিল্লি দাঙ্গার বৃহত্তর চক্রান্তে (Larger Conspiracy) যুক্ত থাকার অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএপিএ)-এ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়। লাইভ ল-র প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার বিচারপতি নবীন চাওলা এবং বিচারপতি শালিন্দর কাউরের ডিভিশন বেঞ্চ আটকদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার উমর খালিদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল। এর আগে ২০২২-এর মে মাসেও উমর খালিদের করা জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এখনও পর্যন্ত ১৪ বার সুপ্রিম কোর্টে উমর খালিদের জামিনের আবেদন স্থগিত হয়েছে। গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে তাঁর জামিনের আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।
দিল্লি দাঙ্গার চক্রান্তে যুক্ত থাকার অভিযোগে শারজিল ইমাম গ্রেপ্তার হন ২৮ জানুয়ারি ২০২০। এই মামলায় আটক অন্যান্যরা হলেন উমর খালিদ ( গ্রেপ্তার - ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০), আতাহার খান (গ্রেপ্তার - ২৯ জুন ২০২০), খালিদ সফি (গ্রেপ্তার - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০), মহম্মদ সালেম খান (গ্রেপ্তার - ২৪ জুন ২০২০), শিফা-উর রহমান (গ্রেপ্তার - ২৬ এপ্রিল, ২০২০), মীরন হায়দার (গ্রেপ্তার - ১ এপ্রিল, ২০২০), গুলফিসা ফতিমা (গ্রেপ্তার - ৪ এপ্রিল, ২০২০) এবং শাদাব আহমেদ (গ্রেপ্তার - ১১ জুন, ২০২০)।
জামিনের আবেদনকারীদের বক্তব্য অনুসারে, যেহেতু ট্রায়াল কোর্ট এখনও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেনি, তাই অভিযুক্তরা মূলত এই যুক্তিতে জামিনের আবেদন জানাচ্ছে যে বিচারে দেরির কারণে তাদের দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে বন্দি থাকতে হচ্ছে।
সমস্ত অভিযুক্তরাই ট্রায়াল কোর্টের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে। যে নির্দেশে তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করা হয়েছিল। এদিনের শুনানির সময় উমর খালিদের পক্ষের আইনজীবী ত্রিদীপ পাইস জানান, শুধুমাত্র হোয়াটস গ্রুপে থাকা কোনও অপরাধ নয়। যেখানে তিনি কোনও মেসেজও করেননি।
তিনি আরও বলেন, উমর খালিদের কাছ থেকে কোনও অর্থ বা অন্য কোনও কিছুই পাওয়া যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে হিংসার কোনও অভিযোগ নেই। তাঁর বিরুদ্ধে গোপন বৈঠক করার যে অভিযোগ উঠেছে, ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০-র সেই বৈঠকও কোনও গোপনীয় বৈঠক ছিলনা।
শারজিল ইমামের আইনজীবী তালিব মুস্তাফা জানান, তিনি সহ-অভিযুক্তের সাথে যুক্ত নন। তিনি জানান, অভিযোগ অনুসারে তিনি কোনও ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠকে অংশ নেননি। ইমামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তালিব মুস্তাফা আরও জানিয়েছেন, বিক্ষোভে ইমামের জড়িত থাকার অভিযোগ ২৩ জানুয়ারী, ২০২০ তারিখে শেষ হয়েছিল এবং পুলিশ যে একমাত্র কাজের কথা উল্লেখ করেছে তা হল বিহারে দেওয়া একটি বক্তৃতা।
এদিন দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া তুষার মেহতা জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে জানান, যদি আপনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু করেন সেক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া বা ছাড়া না পাওয়া পর্যন্ত আপনার জেলে থাকাই ভালো।
তিনি আরও বলেন, উমর খালিদ এবং শারজিল ইমাম দেশকে বিভক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ধর্মের ভিত্তিতে দেশকে বিভক্ত করছিলেন। এঁরা সকলেই একযোগে কাজ করছেন, গুফিশা, উমর, সবাই - তারা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতেন এবং ষড়যন্ত্র করতেন।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন