
মানহানির মামলায় তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলের আবেদন খারিজ করল দিল্লি হাইকোর্ট। প্রাক্তন কূটনীতিবিদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরির স্ত্রী লক্ষ্মী পুরির বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে অবমাননাকর মন্তব্য করার জেরে সাকেতকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এবং ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। শুক্রবার সেই নির্দেশই বহাল রাখল দিল্লি হাইকোর্ট।
গত বছর জুলাই মাসে দিল্লি হাইকোর্ট সাকেতকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এবং ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিলেন সাকেত গোখলে। শুক্রবার বিচারপতি পুরুষেন্দ্র কুমার কৌরব সেই আর্জি খারিজ করে জানান, গোখলে দেরি করে আবেদন করেছেন। আইন মেনে ১৮০ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাতে হয়। কিন্তু সাকেত সেটা করেননি। তাই এর কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। দিল্লি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সাকেত গোখলের প্রতি মাসের সাংসদ বেতনের দুই-তৃতীয়াংশ কেটে নিয়ে লক্ষ্মী পুরিকে দেওয়া হবে। যতদিন না ৫০ লক্ষ টাকা হচ্ছে, ততদিন এই প্রক্রিয়া চালানো হবে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে প্রাক্তন কূটনীতিবিদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরির স্ত্রী লক্ষ্মী পুরিকে নিয়ে একগুচ্ছ পোস্ট করেছিলেন সাকেত। সেই সময় তৃণমূল সাংসদ ছিলেন না সাকেত। তাঁর মূল অভিযোগ ছিল, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় একটি আবাসন রয়েছে লক্ষ্মীর। এমনকি সেই অভিযোগে হরদীপ সিং পুরির নাম জড়িয়েছিলেন সাকেত। সেই সময় হরদীপ ছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের দায়িত্বে। সাকেতের অভিযোগ ছিল, আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির পরিমাণে অসঙ্গতি রয়েছে।
এই নিয়ে সাকেতের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন লক্ষ্মী। তাঁর বক্তব্য ছিল, সমাজমাধ্যমে তাঁদের নিয়ে সাকেত যে পোস্ট করেছেন, তা ভিত্তিহীন। সেই মামলায় গত জুলাই মাসে দিল্লি হাইকোর্ট সাকেতকে নির্দেশ দিয়েছিল, ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এবং ক্ষমা চাওয়ার। যদিও সাকেত সেটা করেননি বলে গত সপ্তাহে এই নিয়ে ফের আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আদালত নির্দেশ দেয়, প্রতিমাসে সাংসদের প্রাপ্ত বেতনের দুই-তৃতীয়াংশ কেটে নেওয়া হবে। সেই টাকা দেওয়া হবে লক্ষ্মীকে। যতদিন না ৫০ লক্ষ টাকা হচ্ছে, ততদিন এই প্রক্রিয়া চালানো হবে।
হাইকোর্টের এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু আদালত আগের নির্দেশই বহাল রেখেছে।
উল্লেখ্য, দিল্লি হাইকোর্ট এই নির্দেশ দেওয়ার পরই তৃণমূলের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দলের বাকি সাংসদরা প্রতি মাসে তাঁদের বেতন থেকে ৪০০০ টাকা করে সাকেতকে দেবেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন