
বৈকুণ্ঠ একাদশীর দর্শন শুরুর আগেই তিরুপতিতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল ছ’জনের। গুরুতর আহতের সংখ্যা প্রায় ৪০। বুধবার রাতে টোকেন সংগ্রহের সময় ভক্তদের ভিড়ে হুড়োহুড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় বুধবার রাতেই শোকপ্রকাশ করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। বৃহস্পতিবার সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন তিনি। তবে বুধবারের এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বুধবার রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। পাশাপাশি, মন্দিরের সমস্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে ‘তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম দর্শনম’ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিআর নাইডুকে ফোন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন তিনি।
অন্যদিকে, এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহতদের সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এছাড়া লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল-সহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
বৈকুণ্ঠ একাদশীর সময় বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শনের সুযোগ পান পুণ্যার্থীরা। এজন্য আগে থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। দশদিনের (১০-১৯ জানুয়ারি) বৈকুণ্ঠ একাদশী এবং বৈকুণ্ঠ দর্শনদ্বারের টিকিট সংগ্রহের জন্য বুধবার সকাল থেকে লাইন দিয়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। এদিন সন্ধ্যার সময় ওই টিকিটকেন্দ্রের সামনে লাইনে ছিলেন চার হাজারেরও বেশি মানুষ। বৈরাগী পট্টিতা পার্কের এমজিএম হাইস্কুল থেকে টোকেন বিতরণের সময় হঠাৎ করেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ, বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীর জন্য খোলা ছিল মাত্র একটি কাউন্টার। এছাড়া পুলিশ ভিড় নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ছিল না বলেও অভিযোগ উঠছে। ভক্তসংখ্যার নিরিখে তিরুপতি মন্দির দেশের শীর্ষস্থানীয়। পাশাপাশি, মন্দিরে ভিড় সামলানোর ব্যবস্থাপনাও বেশ প্রশংসিত। সেখানে এই ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে। যদিও চন্দ্রবাবুর সরকারের দাবি, বৈকুণ্ঠ একাদশী উপলক্ষ্যে পর্যাপ্ত পুলিশ ব্যবস্থা ছিল মন্দিরে।
অন্যদিকে, মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, বুধবার ১ লক্ষ ২০ হাজার টোকেন বিলির প্রস্তুতি ছিল। তবে হঠাৎ করে ভিড় বেড়ে যাওয়ায় এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন মন্দির ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নাইডু। তিনি স্বীকার করেছেন, তাঁদের হিসাবের তুলনায় ভিড় অনেক বেশি ছিল। তিনি আরও জানান, লাইনে দাঁড়ানো এক মহিলা হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন। তাঁকে বিশ্রামের সুযোগ করে দিতে স্কুলের গেট খোলা হয়েছিল। সেই সময় ভক্তদের একাংশ জোর করে ভিতরে ঢুকতে গেলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন