

মধ্যপ্রদেশের পর এবার দলিতদের উপর নৃশংস অত্যাচারের ঘটনা উঠে এলো পড়শি রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকেও। ছাগল ও পায়রা চুরির অপবাদ দিয়ে চার দলিতকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অকথ্য মারধর, নগ্ন করে নাচতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠল ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার শ্রীরামপুর অঞ্চলের হরেগাঁও গ্রামের ওই ঘটনার একটি ভিডিও রবিবার ভাইরাল হয়েছে নেট মাধ্যমে। ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর।
এফআইআরে অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২৫ আগস্ট ছাগল ও পায়রা চুরির অপবাদ দিয়ে চার দলিত যুবককে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত যুবরাজ গালান্দের খামারে। নিগৃহীত ২১ বছর বয়সী নার্সিংয়ের ছাত্র শুভম মাঘাড়ে জানিয়েছেন, “ওরা বাড়ি থেকে আমাদের জোর করে তুলে নিয়ে যুবরাজের খামারে যায়। তারপর সেখানে আমাদের আম গাছের সঙ্গে বেঁধে কেবিল তার দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। মারধরের সময় ওরা রাগ প্রকাশ করে বলে ‘পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর লোকজন নিজেদের কী না কী ভাবে’ এবং ‘আমরা তোদের দেখিয়ে দেবো, আমরাই আসল মারাঠি’।”
শুভম মাঘাড়ে আরও জানিয়েছেন, “ওদের মধ্যে দুজন, দীপক গায়কোয়াড় ও দুর্গেশ বৈদ্য আমাদের উদ্দেশ্যে জাতি নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। আমাদের পিটিয়ে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই মারধর করে ওরা। এমনকি আমাদের নগ্ন করে আমাদের মুখে মূত্র বিসর্জন করে এবং আমাদের গায়ে থুতু ছিটিয়েছে ওরা এবং আমাদের তা চাটতে বাধ্য করা হয়।”
যদিও নিগৃহীত চার দলিত যুবকের পরিবারই ভয় পেয়ে প্রথমে ওই ঘটনা নিয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে রাজি হননি। পরে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য তৈরি সংগঠন বঞ্চিত বহুজন আঘাড়ি (VBA)-এর সদস্য চরণ ত্রিভুবন তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালে তাঁরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনায় মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন যুবরাজ গালান্দে, মনোজ বোরখে, পাপ্পু পারখে, দীপক গায়কোয়াড়, দুর্গেশ বৈদ্য ও রাজু বোরগে। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার দশরথ চৌধুরী জানিয়েছেন, ৬ অভিযুক্তের মধ্যে চারজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকি ২ জনেরও খোঁজ চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭, ৩৬৪, ৩৪২, ৫০৪, ৫০৬, ১৪৭, ১৪৮ এবং ১৪৯ নং ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন