ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস বা টিএসআরে নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল সিপিআইএম। এবার দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর পক্ষ থেকে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছেন, সুষ্ঠুভাবে এই ঘটনার তদন্ত করে আসল সত্যের পর্দা ফাঁস করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই কাণ্ডের সঙ্গে মন্ত্রীর অতি ঘনিষ্ঠ যারা জড়িত, তাদের প্রকাশ্যে আনতে হবে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, যদি এই ধরনের ঘটনা প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। তাঁর দাবি, বিজেপির আমলে নিয়োগ পদ্ধতিতে রাজ্যে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে।
ত্রিপুরার আরক্ষা দফতরের অধীনে টিএসআরে ঘুষ নিয়ে নিয়োগ করা হচ্ছে। দুটি নতুন ব্যাটেলিয়ন গড়ার জন্য রাইফেলম্যানের নিয়োগপত্র ছাড়ার পর একাংশ চাকরিপ্রার্থী এই অভিযোগ তোলেন। তাদের অভিযোগ রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের অতি ঘনিষ্ঠ নেতারা চাকরি দেওয়ার নাম করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ঘুষ দিতে যারা সফল হয়েছেন, তাদের অনেকেই নিয়োগপত্র পেয়ে গিয়েছেন। গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রচুর অর্থের লেনদেন এবং অনিয়ম হয়েছে। বিজেপির এক মহিলা পৃষ্ঠাপ্রমুখ জানান মণ্ডল সভাপতিকে ছেলের চাকরির জন্য ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তারপরেও চাকরি হয়নি।
প্রসঙ্গত, বাম সরকারের আমলে টিএসআরের দুটি ব্যাটেলিয়ন তৈরির অনুমোদন এসেছিল। যদিও বাম সরকারের পতনের ফলে সেই নিয়োগ হয়নি। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার সাড়ে তিন বছর পর ২২০০ শূন্যপদের মধ্যে ১৪৪৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপরই লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেবার অভিযোগ ওঠে, যার বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় পথ অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় চাকরি প্রার্থীদের ক্ষোভের মুখে আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব। রাজ্যের অন্তত ১০টি জায়গায় ক্ষুব্ধ চাকরি প্রার্থীরা বিজেপি অফিস ভাঙচুর করেছে। আগুন ধরানো হয়েছে বেশ কয়েকটি বিজেপি অফিসে। অন্যদিকে চাকরিপ্রার্থীরা রাজ্যের সচিবালয় সংলগ্ন ভিআইপি রোড অবরোধ করলে তাঁদের বেধড়ক মারধোর করে পুলিশ।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।