
২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গায় এবার বিজেপি বিধায়ক তথা দিল্লির মন্ত্রী কপিল মিশ্রর বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দিল দিল্লির এক আদালত।
অতিরিক্ত প্রধান বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বৈভব চৌরাসিয়া মন্তব্য করেন, "অভিযোগ আছে ঘটনার সময় কপিল মিশ্র এলাকায় উপস্থিত ছিলেন, তাই বিস্তারিত তদন্ত আবশ্যক।"
আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে যমুনা বিহারের বাসিন্দা মহম্মদ ইলিয়াসের দায়ের করা এফআইআর-র আর্জির শুনানিতে। দিল্লি পুলিশ এই আবেদনের বিরোধিতা করে জানায় যে, দাঙ্গার সঙ্গে মিশ্রের কোনও যোগাযোগ নেই। তবে আদালত দিল্লি পুলিশের আর্জি খারিজ করে দেয়।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া প্রাক্তন ছাত্র শিফা-উর-রেহমান আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, "২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গার অন্যতম উসকানিদাতা ছিলেন কপিল মিশ্র। তাঁর ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং জনতাকে উসকানি দেওয়া স্পষ্টতই প্রমাণিত।"
আদালত দিল্লি পুলিশকে ১৬ এপ্রিলের মধ্যে একটি 'কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট' দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে এবং অভিযোগকারী ও তৎকালীন ডিসিপি বেদ প্রকাশ সূর্যকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত মনে করছে, "ঘটনাস্থলে উপস্থিত সূর্য এমন কিছু জানেন যা এই বিচার বিভাগ জানে না।"
এই নির্দেশের পর আম আদমি পার্টি (আপ) মন্ত্রী কপিল মিশ্রের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে। আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ এক সংবাদিক সম্মেলনে জানান, "মিশ্রের ঘৃণামূলক বক্তব্যের পরই দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। তাঁর গ্রেফতারি অনিবার্য।" এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৬ এপ্রিল।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। যা কার্যত দাঙ্গার রূপ নেয়। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে এই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে, কপিল মিশ্রের 'উস্কানিমূলক' মন্তব্যের কারণেই হিংসা ছড়ায়। শাহিনবাগে আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের রাস্তা থেকে সরানোর জন্য পুলিশকে তিনদিনের ‘আলটিমেটাম’ দিয়েছিলেন মিশ্র, নইলে রাস্তা ‘সাফাই’ অভিযানে নামবেন তিনি বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এরপরই দিল্লি হিংসা হয়, যেখানে প্রায় ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং কয়েকশ আহত হয়েছিলেন। ঘরছাড়া হন বহু মানুষ। কিন্তু দিল্লি পুলিশের পেশ করা চার্জশিটে ওই বিজেপি নেতার নাম ছিল না। যার বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন মহম্মদ ইলিয়াস।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন