Bulldozer Action: 'বেআইনি' - যোগী সরকারের বুলডোজার নীতির সমালোচনায় শীর্ষ আদালত, দিতে হবে ক্ষতিপূরণ

People's Reporter: আদালত জানিয়েছে, “কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষ করে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে যে আশ্রয়ের অধিকারও ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on
Summary

* শীর্ষ আদালতে যোগী সরকারের বুলডোজার নীতির কড়া সমালোচনা।

* ভুক্তভোগীদের ৬ সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেবার নির্দেশ।

* এভাবে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেওয়া 'অমানবিক ও বেআইনি।'

নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যোগী সরকারের বারবার বুলডোজার ব্যবহারের কড়া সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। এদিনই শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত সব আবেদনকারীকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এদিন শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং প্রয়াগরাজ ডেভলপমেন্ট অথরিটির বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেওয়াকে ‘অমানবিক ও বেআইনি’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

এদিন আদালত জানিয়েছে, “কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষ করে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে যে আশ্রয়ের অধিকারও ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ... সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে আবেদনকারীদের অধিকার লঙ্ঘনকারী অবৈধ ধ্বংসের পদক্ষেপ বিবেচনা করে, আমরা প্রয়াগরাজ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে আবেদনকারীদের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি।”

এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, নিয়ম নীতির কোনও তোয়াক্কা না করে এইভাবে বুলডোজারের ব্যবহার ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং ভুল বার্তা দেয়’। বিগত কয়েক বছর ধরে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে একাধিক জায়গায় কোনও নিয়ম না মেনেই অভিযুক্ত অথবা দোষীদের বাড়ি একতরফা ভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আইনজীবী জুলফিকার হায়দর এবং অধ্যাপক আলি আহমেদ (প্রয়াগরাজে যার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল) সহ পাঁচ জন আবেদনকারী এই বিষয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, নোটিশ দেবার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয় এবং তাঁকে কোনও আবেদন করার সুযোগও দেওয়া হয়নি।

২০২১ সালে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল কয়েকজনের বাড়ি। তাঁদের মধ্যে ছিলেন লুকারগঞ্জের বাসিন্দা এক আইনজীবী, এক অধ্যাপক এবং দুজন মহিলা। এরপরেই যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন না করে বাড়ি ভেঙে ফেলার ব্যাখ্যা চেয়ে প্রথমে এলাহবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ভুক্তভোগীরা। সেই আবেদন খারিজ হয়ে যাবার পর মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি।

শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, “এ ভাবে কারও বাড়ি ভেঙে ফেলা হলে, তা আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়। বাসস্থানের অধিকার বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সে সব কিছুই মানা হয়নি। যা সংবেদনশীলতার অভাবকেই স্পষ্ট করে”।

বিচারপতি ওকা বলেন, ক্ষতিপূরণই কর্তৃপক্ষের জবাবদিহির একমাত্র উপায়। “আমরা এই পুরো বিষয়টিকে অবৈধ হিসেবে রেকর্ড করব এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করছি। এটিই একমাত্র উপায়, যাতে কর্তৃপক্ষ সর্বদা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার কথা মনে রাখে।”

মঙ্গলবার আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, প্রশাসন ভুল করে গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের সম্পত্তি বলে চিহ্নিত করে ওই বাড়িগুলি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি, বাড়ি ভাঙার আগে মাত্র এক দিন আগে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপরেই প্রয়াগরাজ প্রশাসনের এধরণের পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রশাসনের নোটিশ পাঠানোর পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তোলে।

এদিন সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, প্রশাসনের অধিকার নেই বিচারকের ভূমিকায় বসে অভিযুক্তের বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগে বেসরকারি ও বাণিজ্যিক সম্পত্তিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া। এরপরেই বেআইনি ও দখলীকৃত নির্মাণ ধ্বংসের জন্য নির্দেশিকা বেঁধে দেওয়া হয়। আদালত জানিয়েছে, বাড়ি ভাঙার অন্তত ১৫ দিন আগে নোটিশ দিতে হবে। এছাড়া সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার ভিডিও রেকর্ডও করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্ট
Uttarakhand: ঔরঙ্গজেবপুর হবে শিবাজিনগর! ৪ জেলার ১৫ জায়গার নাম বদল উত্তরাখণ্ড বিজেপি সরকারের
সুপ্রিম কোর্ট
Sensex & Nifty: অর্থবর্ষের প্রথম দিনেই শেয়ার বাজারে ধস, সেনসেক্স-নিফটি পড়লো ১২০০ ও ৩০০ পয়েন্টের বেশি

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in