বাঙালি কি মদ খায় না? কেউ বললে সেন্টিমেন্টে লাগে! - মোদীর উপদেষ্টার বিতর্কিত মন্তব্য প্রসঙ্গে দিলীপ

People's Reporter: সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে সঞ্জীবকে বাংলার অধঃপতন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে কলকাতার দুর্দশার মূলে রয়েছেন সাধারণ মানুষই। তাঁদের মধ্যে অভাব রয়েছে সঠিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার।
দিলীপ ঘোষ এবং সঞ্জীব সান্যাল
দিলীপ ঘোষ এবং সঞ্জীব সান্যালফাইল ছবি

বাঙালিরা মদ, সিগারেট খায়। আর সারা বিশ্বের ব্যাপারে জ্ঞান দেয়। সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তথা অর্থনীতিবিদ সঞ্জীব সান্যাল। সঞ্জীবের এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টাকে পাল্টা আক্রমণ করেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। যদিও সঞ্জীবের মন্তব্যকে কার্যত সমর্থন করেছেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

সম্প্রতি একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আসেন সঞ্জীব সান্যাল। তাঁকে বাংলার অধঃপতন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, সঞ্জীব জানান, “বর্তমানে কলকাতার দুর্দশার মূলে রয়েছেন সাধারণ মানুষই। তাঁদের মধ্যে অভাব রয়েছে সঠিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার।”

তিনি আরও বলেন, “সমাজ যদি মনে করে এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়াই জীবনের সাফল্য, অথবা আড্ডা দেওয়া বা বুদ্ধিজীবী হওয়া, কলকাতার ভাষায় যাঁকে ‘আঁতেল’ বলে, তা হলে কিছুই করার নেই। ধূমপান করে, মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে সারা বিশ্বের ব্যাপারে জ্ঞান দেওয়া যদি আপনার লক্ষ্য হয়, মৃণাল সেনের ছবিই যদি আপনার সমাজের অনুপ্রেরণা হয়, তা হলে এই অভিযোগ করার কোনও মানে নেই।”

সঞ্জীবের এই মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূলও। নিজেদের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে দলটি লেখে, “বাংলাবিদ্বেষী বিজেপি নিজেদের সব মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক উপদেষ্টা এবং আধুনিক দিনের মীরজাফরদের তালিকায় নতুন সংযোজন সঞ্জীব সান্যাল বাংলার গৌরবময় সংস্কৃতির প্রকাশ্যে সমালোচনা করে নিজেকেই বোকা বানিয়েছেন। বাংলা-বিরোধী বিজেপি নেতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, তিনি আমাদের সাংস্কৃতিক আদর্শ মৃণাল সেন এবং আনন্দের শহর কলকাতার প্রভূত সংস্কৃতিকে উপহাস করেছেন।”

এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে লেখেন, “প্রধানমন্ত্রীর এই ‘বাঙালি’ অর্থনীতিবিদ সারা জীবন দিল্লি আর বিদেশেই থেকেছেন। বাংলা অক্ষরও জানেন না। এঁর মতো কিছু বিশ্বাসঘাতক বাঙালি বিজেপি আর মোদীর ব্যক্তিগত বঙ্গবিরোধী বিষ আর আক্রোশকে উস্কে দিয়ে নিজেদের আখের গোছাচ্ছে। ছিঃ।”

অন্যদিকে, তৃণমূলের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ তথা বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তিনি জানান, "বাঙালি সম্পর্কে অনেকে অনেক কিছু বলে, আগেও বলেছে। আর এর জন্য বাঙালিরাই দায়ী। বাইরের লোক বলে দিলে সেন্টিমেন্টে লাগে! বাংলায় যে দুর্নীতি চলছে এরপরেও বাঙালি যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করছে কেউ বলবে? মদ কারা খায় না, বাঙালি কি খায় না? সন্ধ্যার পর পাড়ায় পাড়ায় পার্টি অফিসে মদের ফোয়ারা চলছে। বাইরের লোক বললে যদি কষ্ট হয় তাহলে বন্ধ করুন। ইমেজ খারাপ কে করেছে আজকে? হাসপাতালে ডাক্তার নেই নার্স নেই, ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। থানাগুলো তোলাবাজির জায়গা হয়ে গেছে। আর চাকরি করতে গেলে কন্ট্রাকচুয়াল থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গায় টাকা দিতে হয়।“

দিলীপ ঘোষ এবং সঞ্জীব সান্যাল
সরকার বেকারত্ব সমস্যার সমাধান করতে পারে না! মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার মন্তব্যে অস্বস্তিতে মোদী
দিলীপ ঘোষ এবং সঞ্জীব সান্যাল
তলবের পরেও কেজরির গ্রেফতারি নিয়ে পূর্ব অবস্থানেই আমেরিকা, কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ নিয়েও মন্তব্য

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in