
গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভোট দান থেকে বিরত থাকল ভারত। ভারতের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা একে 'কাপুরুষের মতো সিদ্ধান্ত' বলে কটাক্ষ করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধবিরতি সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব পেশ করে স্পেন। যেখানে বলা হয়, দুই পক্ষ থেকেই নিঃশর্ত স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠী কর্তৃক আটক সকল বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য সংখ্যা ১৯৩। যার মধ্যে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৪৯টি দেশ, প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দান করেছে ১২টি দেশ এবং ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে ভারত, আলবেনিয়া, ক্যামেরুন, ইকুয়েডর, ইথিওপিয়া, মালাউই, পানামা, দক্ষিণ সুদান সহ মোট ১৯টি দেশ।
রাষ্ট্রসংঘে থাকা ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পার্বথানেনী হরিশ বলেন, "এর আগেও ইজরায়েল-গাজা সম্পর্কিত প্রস্তাবে ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে। ভারত সবসময়ই শান্তির পক্ষে। গাজায় চলতি সংঘর্ষ ও মানবিক সংকট নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। আমরা সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির তীব্র নিন্দা জানাই। তবে আমরা আলোচনায় বিশ্বাসী। অবিলম্বে দুই পক্ষের উচিত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। সেই জন্যই ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে।"
ভারতের ভোটদানে বিরত থাকা নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা পবন খেরা। এক্স মাধ্যমে তিনি লেখেন, "২০২৫ সালের ১২ জুন রাষ্ট্রসংঘে গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ভোটদানে ভারতের বিরত থাকা নৈতিক কাপুরুষতার কাজ। যা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যবোধের প্রতি লজ্জাজনক বিশ্বাসঘাতকতা।"
তিনি আরও লেখেন, "ভারত একসময় প্যালেস্টাইনের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিল। ১৯৭৪ সালে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (PLO) কে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম অ-আরব দেশ হয়ে উঠেছিল ভারত। ১৯৮৩ সালে ভারত নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ৭ম জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (NAM) শীর্ষ সম্মেলনে ইয়াসির আরাফাতকে আমন্ত্রণ জানায় এবং ১৯৮৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আমরা ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কৌশল হিসেবে নয়, বরং নীতিগত বিষয় হিসেবে। কিন্তু আজ, সেই গৌরবময় ঐতিহ্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।"
পবন খেরা জানান, ভারত এখন তেল-আবিবের কাছে মাথা নত করছে। সেই নীতিগুলি বর্জন করছে যা একসময় আমাদের বিশ্ব মঞ্চে দিক নির্ণয়ের পথ দেখিয়েছিল। বিশ্ব নেতৃত্ব নীরবতা এবং চাটুকারিতার উপর নির্মিত নয়। আমরা যদি চাই যে আমাদের কণ্ঠস্বর বিশ্ব মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ হোক, তবে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কথা বলার সাহস দেখাতে হবে।