
বিহার নির্বাচনে জোট করে লড়তে পারে প্রশান্ত কিশোরের জন সুরজ পার্টি এবং চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (রাম বিলস)। একাধিক সূত্র মারফত এমনটাই শোনা যাচ্ছে। যদিও কোনও দলের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি। এর আগে প্রশান্ত কিশোর একাধিকবার জানিয়েছিলেন তাঁর দল জন সূরজ পার্টি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতা করতে আগ্রহী নয়।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের অনেক আগে থেকেই চিরাগ পাসোয়ান আসন সমঝোতা নিয়ে এনডিএ শিবিরের উপর চাপ বাড়াচ্ছেন। কিছু দিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর দলকে সম্মানজনক আসন দিতে হবে। ২০২০ বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এককভাবে লড়াই করেছিল এনডিএ শরিক চিরাগ পাসোয়ানের দল। অন্যদিকে বিহার নির্বাচনে প্রথমবার লড়তে চলেছে প্রশান্ত কিশোরের নব নির্মিত দল জন সুরজ পার্টি। দুই দলের মধ্যে জোট হবার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
চিরাগ পাসোয়ান ও প্রশান্ত কিশোরের সম্ভাব্য জোটের আলোচনা বিহারের রাজনৈতিক মহলে নতুন মোড় এনে দিয়েছে। এলজেপি (রামবিলাস) সূত্রে জানানো হয়েছে, দরজা সকলের জন্যই খোলা।
সূত্রের দাবি, চিরাগ বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪০টি আসন চাইছেন। কারণ গত বছরের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দল যে ৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তার সবকটিতেই জয়লাভ করে। ফলে সরল হিসেবেই তাঁর দলের কমপক্ষে ৩৫টি আসন পাবার কথা। যদিও এনডিএ শিবির চিরাগের দলের জন্য ২৫টি আসন ছাড়ার পরিকল্পনা করেছে। এখনও পর্যন্ত যে প্রস্তাবে সম্মত হননি চিরাগ পাসোয়ান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রশান্ত কিশোরের সাথে চিরাগ পাসোয়ানের সম্ভাব্য জোটের আলোচনা শুধুমাত্র বিজেপির ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখছেন। বাস্তবে এই জোটের সম্ভাবনা খুব কম। কারণ চিরাগ পাসোয়ান এনডিএ শরিক এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অন্যদিকে প্রশান্ত কিশোরের দল এনডিএ বিরোধী হিসেবেই পরিচিত। অন্যদিকে এলজেপি-র তুলনায় প্রশান্ত কিশোরের দল অনেকটাই নতুন।
বিহারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিজেপির পক্ষ থেকেও চিরাগ পাসোয়ানকে দূরে ঠেলে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ বিগত লোকসভা নির্বাচনে নিজের কোটার ৫টি আসনেই জয়লাভ করেছে চিরাগ পাসোয়ানের দল। ভোট পেয়েছে ৬.৪৭ শতাংশ। সেই ফলাফল অনুসারে সাদামাটা হিসেবে কমপক্ষে ৩৫ আসন চিরাগের প্রাপ্য। যদিও ২৩৪ আসনের মধ্যে একা চিরাগ পাসোয়ান ৩৫ আসন নিয়ে নিলে অন্য শরিকদের আসন বন্টনে সমস্যায় পড়তে হবে এনডিএ শিবিরকে।
গতবার নির্বাচনে বিহারে এনডিএ শিবিরে আসন নিয়ে এই সমস্যা ছিল না। কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে জেডিইউ এবং বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল যথাক্রমে ১১৫ ও ১১০ আসনে। এছাড়া বিকাশশীল ইনসান পার্টি এবং হিন্দুস্তান আওয়ামী মোর্চা ৭ ও ১১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সেবার এনডিএ-এর বাইরে থেকে ১৩৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল চিরাগ পাসোয়ানের দল। মাত্র ১ আসনে জয়ী হলেও তাঁর দলের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫.৬৬ শতাংশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন