
আর কয়েকমাস পরই বিহারে নির্বাচন। তার আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস)-এর সভাপতি চিরাগ পাসোয়ান। শনিবার পাটনায় নীতিশ কুমার নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। যা যথেষ্ট চিন্তায় রেখেছে বিজেপি ও জেডিইউ শিবিরকে।
শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চিরাগ বলেন, “আমি দুঃখিত যে আমি এমন একটি সরকারকে সমর্থন করছি যার অধীনে অপরাধ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি, অন্যথায় এর পরিণতি খুবই খারাপ হবে। এখানকার মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “রাজ্যে একের পর এক খুন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ডাকাতি, চুরি এবং ইভটিজিংয়ের মতো অপরাধ ঘটছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং কিছু গ্রেপ্তারও হয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় এই ধরনের ঘটনা এতো ঘনঘন ঘটছে কেন?”
চিরাগ পাসোয়ান প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে বলেন, “হয় প্রশাসনের নিজস্ব হাত রয়েছে এই অপরাধে, নয়তো তারা ঘটনাগুলি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে, নয় তারা পুরোপুরি ব্যর্থ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে। পরিস্থিতি এখন বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। আমি বিহার সরকারকে অনুরোধ করছি, দয়া করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন। জনগণ আর এই সন্ত্রাসের মধ্যে বাস করতে পারছে না।”
বিহার, বিশেষ করে পাটনা ও গয়া অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া একাধিক অপরাধ রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
গত ২৪ জুলাই অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই হোমগার্ড পদপ্রার্থী এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে অ্যাম্বুল্যান্সের চালক এবং এক প্রযুক্তিকর্মীর বিরুদ্ধে। বৌদ্ধ গয়ায় হোমগার্ড নিয়োগ পরীক্ষার সময়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন ওই তরুণী। তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন চিরাগ।
এর আগে পারস হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে পাঁচজন বন্দুকধারী চন্দন মিশ্র নামের এক কুখ্যাত গ্যাংস্টারকে গুলি করে হত্যা করে। হাসপাতালের মতো জায়গায় এভাবে খুন করা সাধারণ মানুষের মনে প্রবল আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
কয়েকদিন আগে শিল্পপতি তথা বিজেপি নেতা গোপাল খেমকাকে তাঁর বাড়ির সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয়। বালি ব্যবসায়ী রমাকান্ত যাদবকে খুন করা হয়। এমনকি মুদি ব্যবসায়ী বিক্রম ঝা-কেও প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার মতো ঘটনা ঘটে।
চিরাগ পাসোয়ানের বক্তব্য শুধু যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, তা নয় বরং রাজনৈতিক বার্তাও। বিহার রাজনীতিতে এনডিএ জোটের অন্যতম মুখ চিরাগের এইভাবে প্রকাশ্যে সরকারকে কাঠগড়ায় তোলা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আগামী দিনে বিহার রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে মনে ওরা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন