
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা 'শুল্ক যুদ্ধ'-এর অবসান ঘটতে চলেছে। সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ম্যারাথন আলোচনার পর এই ঐতিহাসিক ঘোষণা আসে।
চলতি বছরের শুরু থেকে চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক নীতি নিয়ে কার্যত যুদ্ধ চলছিল। যা প্রভাব ফেলেছিল দুই দেশের অর্থনীতিতে। এই অবস্থায় প্রথমবারের মতো উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় বসে ওয়াশিংটন ও বেজিং। আলোচনার পর যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে আনবে। অন্যদিকে চীনও আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করবে। আগামী ৯০ দিন এই নীতি বজায় থাকবে বলেই জানা গেছে।
দুই দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ভবিষ্যতেও অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। আলোচনায় নেতৃত্ব দেন চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফেং, মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংবাদিক সম্মেলনে বেসেন্ট বলেন, “আমরা বুঝতে পেরেছি, আমাদের স্বার্থে মিল আছে। কেউই দ্বন্দ্ব চায় না।”
এই চুক্তির প্রেক্ষিতে বিশ্বের বাজারেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হংকংয়ের বেঞ্চমার্ক সূচক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, ডাও জোন্স ফিউচার বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি, S&P 500 প্রায় ৩ শতাংশ এবং Nasdaq কম্পোজিট ফিউচার ৩.৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে শুল্ক নীতির পাশাপাশি আরও ফেন্টানাইলের উৎপাদনের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। মার্কিন প্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন চীন থেকে ফেন্টানাইল তৈরির রাসায়নিক উপাদান নিয়ে। বেসেন্ট বলেন, “চীন এখন বুঝতে পারছে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইল সংকট কতটা ভয়াবহ।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি বাণিজ্য যুদ্ধের তীব্রতা অনেকটাই কমিয়ে আনবে এবং দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন