রাজ্যের থেকে ১৮৫২ কোটি টাকা পায় কেন্দ্র, বকেয়া মেটাতে নবান্নকে চিঠি পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

রাজ্যের থেকে ১৮৫২ কোটি টাকা পায় কেন্দ্র, বকেয়া মেটাতে নবান্নকে চিঠি পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, এই খাতে ৯০ দিনের মধ্যে অর্থ মিটিয়ে না দিলে ২.৫% হারে জরিমানা করা হয়। তাতে এ পর্যন্ত বাড়তি বোঝা চেপেছে প্রায় ৪৪ কোটি টাকার। সব মিলিয়ে প্রায় ১৮৫২ কোটি টাকা মেটাতে হবে রাজ্যকে।

রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের খরচ এবং বকেয়ার সুদ মিলিয়ে মোট ১৮৫২ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য নবান্নের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যা ঘিরে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে।

এমনিতেই, কেন্দ্রের কাছে বিপুল অর্থ বকেয়া রয়েছে রাজ্যের। দীর্ঘদিন ধরেই সেই অর্থ আটকে রেখেছে কেন্দ্রে। যা নিয়ে মোদী সরকারকে বারবার কাঠগড়ায় তুলেছে রাজ্য। এমনকি, রাজনৈতিক ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পেক্ষাপটে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বকেয়া টাকা চেয়ে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি, রাজ্যের উপর পাল্টা চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসাবে দেখছে রাজনৈতিক মহল।

নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা-সহ একাধিক কারণে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করা হয়ে থাকে। এজন্য খরচের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রাজ্যের কাছে দাবি করে থাকে কেন্দ্র। রাজ্যের কাছ থেকে সেই অর্থই চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে মোদী সরকার।

জানা যাচ্ছে, নবান্নের কাছে যে চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পাঠিয়েছে, তাতে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই খাতে রাজ্যের কাছে বকেয়া রয়েছে প্রায় ১৮০৬ কোটি টাকা। এবং, গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া হয়েছে আরও প্রায় ২১ কোটি টাকা। মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, এই খাতে ৯০ দিনের মধ্যে অর্থ মিটিয়ে না দিলে ২.৫% হারে জরিমানা করা হয়। তাতে এ পর্যন্ত বাড়তি বোঝা চেপেছে প্রায় ৪৪ কোটি টাকার। সব মিলিয়ে প্রায় ১৮৫২ কোটি টাকা মেটাতে হবে রাজ্যকে।

তবে, এই বকেয়া পরিশোধ না করার বিষয়ে রাজ্যের যুক্তি হল - রাজ্য নিজে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সাধারণত চায়নি। নির্বাচন থাকলে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সুপারিশে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে আসে। এ রাজ্যে গত কয়েকটি নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক বাহিনী পাঠানো হয়েছিল। ফলে যে কর্তৃপক্ষ বাহিনী পাঠানোর সুপারিশ করেন, তাদেরই খরচের বিষয়টা দেখা দরকার। তা রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়।

এই ইস্যুতে কেন্দ্র এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মধ্যে বিরোধ প্রথম নয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের জন্য রাজ্যকে যে ব্যয়ভার বহন করতে হয়, সেই ব্যয়ের বকেয়া অর্থ পরিশোধ করছে না রাজ্যগুলি।

সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের নাম টেনে এনে তিনি বলেন, বকেয়া পরিশোধ না করার বিষয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে থাকে পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু, তাঁরাই কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের জন্য বকেয়া পরিশোধ করছে না।

তবে, এক্ষেত্রে যুক্তি তুলে ধরেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। নবান্নের দাবি, মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের খরচ বহন করার দায়ও রাজ্যের উপর চাপানো হচ্ছে। কিন্তু, মাওবাদী, বামপন্থী উগ্রপন্থাকে জাতীয় সমস্যা হিসাবে বিবেচিত করা হয়ে থাকে। এবং, এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় আধাসেনা মোতায়েন করা হয়, যারা রাজ্য পুলিশের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করে।

তাই, মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত ব্যয়, যা একটি জাতীয় সমস্যা, তা পুরোটাই কেন্দ্রীয় সরকারকে বহন করা উচিত।

-With INAS Inputs

রাজ্যের থেকে ১৮৫২ কোটি টাকা পায় কেন্দ্র, বকেয়া মেটাতে নবান্নকে চিঠি পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
পুলওয়ামা কান্ড নিয়ে বিস্ফোরক দাবির মাঝেই সত্যপাল মালিককে তলব CBI-র
রাজ্যের থেকে ১৮৫২ কোটি টাকা পায় কেন্দ্র, বকেয়া মেটাতে নবান্নকে চিঠি পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
এবার দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বই থেকে সরছে ডারউইনের বিবর্তনবাদ! ক্ষুব্ধ শিক্ষক-বিজ্ঞানীরা

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in