
লাদাখকে পূর্ণ রাজ্য করার দাবি নিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াতেই পরিবেশবিদ সোনম ওয়াংচুকের বিরুদ্ধে এবার তদন্তে নামল সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (CBI)। অভিযোগ, হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অলটারনেটিভস লদাখ (HIAL)-এ বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (FCRA) লঙ্ঘন করেছেন তিনি। পাশাপাশি সোনামের পাকিস্তান সফরও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা।
বর্তমানে পৃথক রাজ্যের দাবিতে অশান্তি ছড়িয়েছে লাদাখের লেহ শহরে। পুলিশের গুলিতে চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ৭০ জন। ইঞ্জিনিয়র, গবেষক তথা সমাজকর্মী ওয়াংচুক লাদাখকে পূর্ণ রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা এবং এই অঞ্চলকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন। গতকালের সহিংসতার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক গোটা ঘটনার জন্য ওয়াংচুককে দায়ী করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "অনেক নেতা ওয়াংচুককে অনশন প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি তা না করে বিক্ষোভে উস্কানি দিয়েছেন। নেপালে জেন-জি বিক্ষোভের উল্লেখ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন"।
এই আবহে সোনমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। অভিযোগ, ওয়াংচুকের সংস্থা HIAL নিয়ম ভেঙে বিদেশি অনুদান নিয়েছে। পিটিআই-কে ওয়াংচুক জানিয়েছেন, প্রায় ১০ দিন আগে সিবিআই-এর তদন্তকারী দল এই বিষয়ে সরকারি নির্দেশনামা নিয়ে তাঁর কাছে এসেছিল। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই জানিয়েছে, FCRA-র অধীনে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র না নিয়ে বিদেশি অনুদান গ্রহণের অভিযোগ তোলা হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমরা বিদেশি তহবিলের উপর নির্ভরশীল থাকতে চাই না, তবে আমরা আমাদের জ্ঞান রফতানি করি এবং তার বিনিময়ে খরচ সংগ্রহ করি। এটিকেই সিবিআই ভেবেছে বিদেশি অনুদান।’’
ওয়াংচুক জানিয়েছেন, পরিষেবা চুক্তি মেনে রাষ্ট্রপুঞ্জ, সুইৎজারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইটালির একটি সংস্থাকে তাঁরা ভারতীয় জ্ঞান সরবরাহ করেন।
সিবিআই তদন্তকারী দল এখনও লাদাখে আছে এবং তাঁর কাছে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে তাদের প্রাপ্ত বিদেশি অনুদানের বিবরণ চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোনম।
উল্লেখ্য, এর আগে আগস্টে লদাখ প্রশাসন HIAL-এর জন্য জমি বরাদ্দ বাতিল করে। যা নিয়ে বড় বিতর্ক সৃষ্টি হয়। রাজ্য ও সাংবিধানিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলনরত লদাখি গোষ্ঠীগুলি এটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপর আক্রমণ বলে সরব হয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে গিয়েছিলেন সোনম। কেন সেই সফর করেছিলেন তা নিয়েও তথ্য সংগ্রহ করতে চাইছে সিবিআই।
বুধবারের আন্দোলন প্রসঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় সোনম ওয়াংচুক জানান, যুবকদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বুধবার। যার ফলে তাঁরা রাস্তায় নেমে এসেছে। এটা জেন জি আন্দোলন। গত পাঁচ বছর ধরে লাদাখের যুবকদের হাতে কাজ নেই। লাদাখের সমস্যা কখনও মেটানো হয়নি। পুরো লাদাখের মানুষ আমাদের এই দাবির সঙ্গে আছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন