কলার ন্যায্য দাম না পাওয়া পর্যন্ত আমি গায়ে কোনও জামা পরবো না এবং পায়ে জুতো পরবো না। মধ্যপ্রদেশের এক কলা চাষি সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে একথা জানিয়েছেন। দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদন অনুসারে, সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন কিশোর ভাসানকার নামক ওই কৃষক।
বৃহস্পতিবার বুরহানপুরে কলা চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকরা তাঁদের ফসল সহ বুরহানপুর শহরে বিক্ষোভ দেখান এবং অবিলম্বে এই অঞ্চলের ফসলকে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তারা জেলাশাসকের অফিসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয় এবং কৃষকদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি বেধে যায়।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্র লাগোয়া মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুরের অধিকাংশ কৃষক কলা চাষের ওপর নির্ভরশীল। মধ্যপ্রদেশে সবথেকে বেশি কলা উৎপাদন হয় এই জেলায়। এই অঞ্চলের কৃষকদের বক্তব্য, কলার দাম পড়ে যাওয়ায় তাঁদের চাষের খরচ উঠছে না। বর্তমানে তারা পাইকারদের কাছে ২ টাকা থেকে ৩ টাকা কিলো দরে কলা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অবিলম্বে এই বিষয়ে তারা সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
কৃষকরা আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান মন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার অন্তর্ভুক্ত নয় বুরহানপুরের কলা চাষিরা। ফলে তারা বীমার সুরক্ষা পাননা। যদিও মহারাষ্ট্রের কৃষকরা এই সুবিধা পান। পাইকাররা কৃষকদের কাছ থেকে অত্যন্ত কম দামে কলা কিনে অনেক বেশি দামে তা বাজারে বিক্রি করছেন।
এর আগে অক্টোবর মাসের শুরুতে বুরহানপুরের কলা চাষিরা কলার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (Minimum Support Price – MSP) দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। কৃষকদের দাবি ছিল সরকারকে কলার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ২০০০ টাকা প্রতি ক্যুইন্ট্যাল বেঁধে দিতে হবে। বর্তমানে তারা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা কুইন্ট্যালে কলা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। যাতে তাদের চাষের খরচ উঠছে না।
ওই সময় আন্দোলনরত কৃষকরা জানিয়েছিলেন, বর্তমান দামে ফসল বিক্রি করে আমরা আমাদের চাষের খরচ তুলতে পারছি না। অবিলম্বে এই বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। যাতে আমাদের ফসলের দাম নির্দিষ্ট করা যায় এবং আমরা আমাদের চাষের খরচ তুলতে পারি।
মধ্যপ্রদেশ সরকারের বুরহানপুর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে জেলার চাষযোগ্য ১ লক্ষ ৩ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়। তথ্য অনুসারে ২০১৪ সালে বুরহানপুরে ১৬,০০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হলেও বর্তমানে সেখানে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়। ২০১৪ সালে যেখানে ১০ লক্ষ টন কলা উৎপাদন হয়েছিল, ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ লক্ষ টনে। এই অঞ্চলের প্রায় ১৯ হাজার কৃষক কলা চাষের সঙ্গে যুক্ত। ২০২৪ সালে এই অঞ্চলে প্রতি হেক্টরে ৭০ টন কলা উৎপাদিত হয়েছিল।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন