* মহাজোটের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে ঘোষিত হল তেজস্বী যাদবের নাম।
* বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট তাঁর নাম ঘোষণা করেন।
* এই ঘোষণার পরে মহাজোটের অভ্যন্তরীণ জট অনেকটাই কেটে গেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বহু টানাপোড়েনের পর তেজস্বী যাদবের নাম বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে ঘোষিত হল। মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষিত হবার পর তেজস্বী যাদব সাংবাদিকদের জানান, আমরা মহাজোটের নেতৃত্ব শুধুমাত্র সরকার গঠন করতে চাই না অথবা মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইনা। আমরা বিহারের জন্য কাজ করতে চাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করব এবং এনডিএ-র ডবল ইঞ্জিন সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করবো। কারণ ডবল ইঞ্জিন এই সরকারের একটা ইঞ্জিনের নাম দুর্নীতি, অন্য ইঞ্জিনের নাম অপরাধ।
সাংবাদিক সম্মেলনে তেজস্বী যাদব আরও বলেন, আমরা অমিত শাহকে জিজ্ঞেস করতে চাই, আপনারা তো প্রত্যেক নির্বাচনের আগে নীতিশ কুমারের নাম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করে দেন। এবারে কেন করেননি? এটাই যে নীতিশ কুমারের শেষ নির্বাচন তা অমিত শাহই স্পষ্ট করে দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর সকালে পাটনায় মহাজোটের এক সাংবাদিক সম্মেলনে তেজস্বী যাদবের নাম ঘোষণা করেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট। এই ঘোষণা মহাজোটের নিজেদের দ্বন্দ্ব কেটে যাবার ইঙ্গিত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই বিকাশশীল ইনসান পার্টির মুকেশ সাহানীর নামও উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন গেহলট।
সাংবাদিক সম্মেলনে অশোক গেহলট বলেন, আমরা তো আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে দিলাম। এনডিএ বলুক তাঁদের মুখ্যমন্ত্রীর নাম কী? তিনি বলেন, আমি অমিত শাহকে জিজ্ঞাসা করছি, আমাদের নেতা তেজস্বী যাদব। এবার আপনারা আপনাদের মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করুন। এদিন গেহলট বলেন, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী চান, বিহারের বিরোধীদের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হন তেজস্বী যাদব।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অশোক গেহলট জানান, "সব বিশিষ্ট নেতৃত্বের সাথে আলোচনার পর, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আসন্ন বিহার নির্বাচনে তেজস্বী যাদবই হবেন মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ। তার সামনে দীর্ঘ ভবিষ্যৎ রয়েছে।" এর আগে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তেজস্বী যাদবের নাম মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষিত না হবার কারণে মহাজোটের অভ্যন্তরে মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল। সূত্র অনুসারে, তেজস্বী মনে করেছিলেন মূলত বিহার কংগ্রেস সভাপতির অনিচ্ছাতেই তাঁর নাম মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করতে চাইছেনা কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক সম্মেলনের আগে পর্যন্ত মহাজোট শিবিরে মতানৈক্যের যে আবহ দেখা গেছিল আজ তা অনেকটাই মিটে গেল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহল। যদিও এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনের আগে পর্যন্ত সাংবাদিক সম্মেলনের ব্যাক ড্রপে তেজস্বী যাদব ছাড়া আর কোনও নেতার ছবি নেই কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
একাধিক বিজেপি নেতা বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিজেপি নেতা শাহজাদ পুনাওয়ালা বিষয়টি নিয়ে উপহাস করে বলেন, “গতকাল পর্যন্ত ঘোষণা করা হচ্ছিল যে রাহুল গান্ধীই মুখ, কিন্তু এখন আমার মনে হয় কংগ্রেস দলের প্রতি কোনও সম্মান অবশিষ্ট নেই। এই জোটের দিকে তাকান, কোনও লক্ষ্য নেই, কোনও দৃষ্টিভঙ্গি নেই, কেবল বিভ্রান্তি, কেবল বিভাজন এবং কেবল পদের জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা। এরা প্রার্থী চূড়ান্ত করার কোনও সিদ্ধান্ত এখনও নিতে পারেনি।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন