অবশেষে মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে গাজায় ইজরায়েলী গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করার অনুমতি পেল সিপিআইএম। মঙ্গলবার বোম্বে হাইকোর্ট সিপিআইএম-কে মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। এর আগে এই আবেদনে বোম্বে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এর আগে মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকেই সিপিআইএম-এর আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এই আবেদন খারিজ হওয়ার পর, সিপিআই(এম) পুলিশের অনুমতি প্রত্যাখ্যানকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে নতুন করে আবেদন দাখিল করে।
মঙ্গলবার ১২ আগস্ট বোম্বে হাই কোর্টের এক ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি রবীন্দ্র ঘুগে এবং বিচারপতি গৌতম আঙ্খাদ মুম্বাই পুলিশের বিবৃতির ওপর ভিত্তি করে সিপিআইএম-কে এই অনুমতি দেন। মুম্বাই পুলিশ ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিভিন্ন প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য স্বীকৃত আজাদ ময়দানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ করার জন্য সিপিআইএম-কে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার মুম্বাই পুলিশ বোম্বে হাইকোর্টকে জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ২০ আগস্ট আজাদ ময়দানে 'শান্তিপূর্ণ সমাবেশ' করার জন্য ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) কে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরপরেই ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিদ্বয় তাতে সহমত পোষণ করেন। আদালতে সিপিআইএম-এর পক্ষের আইনজীবী মিহির দেশাই জানিয়েছেন, ২০ আগস্ট দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
গত ২৫ জুলাই বোম্বে হাইকোর্টে বিচারপতি রবীন্দ্র ঘুগে (Justice Ravindra Ghuge) এবং বিচারপতি গৌতম আঙ্খাদ-এর (Justice Gautam Ankhad) ডিভিশন বেঞ্চ সিপিআইএম-এর করা এক আবেদনের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল “আগে নিজেদের দেশের নাগরিকদের জন্য দেশপ্রেম দেখান”। গাজায় ইজরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে এক বিক্ষোভ কর্মসূচী করার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সিপিআইএম। যে আবেদন খারিজ করে বোম্বে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ একথা জানায়।
সিপিআইএম-এর করা আবেদন খারিজ করে ওইদিন বিচারপতি রবীন্দ্র ঘুগে জানিয়েছিলেন, “আমাদের দেশে বহু ইস্যু আছে…আমরা এই ধরণের কিছু চাইনা। আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আপনারা গাজা, প্যালেস্টাইন দেখছেন, কিন্তু কেন নিজেদের দেশের জন্য কিছু করছেন না? দেশপ্রেমী হন…গাজা এবং প্যালেস্টাইনের জন্য কথা বলা দেশপ্রেম নয়… আমাদের দেশের ইস্যু নিয়ে কথা বলুন…।”
কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্ক্সবাদী)-র (CPIM) করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একথা জানানোর পরেই প্রতিক্রিয়া জানানো হয় সিপিআইএম-এর পক্ষ থেকে। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণের কড়া সমালোচনা করে সিপিআইএম পলিটব্যুরো এক বিবৃতিতে জানায়, এই পর্যবেক্ষণগুলি এই সত্যকে উপেক্ষা করে যে গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে মহাত্মা গান্ধী, স্বাধীন ভারতের জাতীয় আন্দোলন এবং পরবর্তীকালে পররাষ্ট্র নীতি প্যালেস্তিনীয় জনগণের স্বাধীনতা এবং স্বদেশের অধিকারের পক্ষে সমর্থন জানানো থেকে কখনও পিছপা হয়নি। পাশাপাশি এই বেঞ্চ ইজরায়েলি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী দ্ব্যর্থহীন নিন্দা এবং রাষ্ট্রসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ঘোষিত অবস্থানগুলি সম্পর্কে অবগত নয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন