
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আগামীকাল দেশের অধিকাংশ এলাকা জুড়ে ব্যাপক বেসামরিক প্রতিরক্ষা মহড়া অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। দেশের কয়েকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ২৪৪টি জেলায় এই মহড়া হবে। এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। পহেলগাঁও হামলার পর এই মহড়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই মহড়ার মূল লক্ষ্য হলো বেসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা মূল্যায়ন ও জোরদার করা। গ্রাম স্তর পর্যন্ত এই মহড়া পরিচালনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মহড়ায় অংশ নেবেন জেলা প্রশাসক, সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবক, হোম গার্ড, এনসিসি, এনএসএস শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণির মানুষ। বিমান হামলার সতর্কতা, ব্ল্যাকআউট সহ একাধিক অনুশীলন আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে প্রাথমিক চিকিৎসা ও নিরাপদ আশ্রয়ের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এর আগে রবিবার রাত ৯টা নাগাদ আধ ঘণ্টার জন্য পঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্টে সব আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট ড্রিল’ করেছে সেনাবাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের আগে থেকেই এ নিয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, তাঁরা যেন আলোকিত বা দূর থেকে চোখে পড়ে এমন কোনও বস্তু বা আলো ব্যবহার না করেন ওই সময়টুকু। সাধারণত যুদ্ধের সময় বিপক্ষের নজর এড়াতে বা বিপক্ষের বায়ুসেনাকে বিভ্রান্ত করতে বিস্তীর্ণ এলাকার আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৫ জন নিরীহ পর্যটক ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হন। এই নৃশংস ঘটনায় গোটা দেশ শোকাহত। ক্ষোভেও ফুঁসছে দেশবাসী।
অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তানের যোগ থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ তৈরি করতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমনকি সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখার কথাও জানিয়েছে ভারত সরকার।
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর মহড়ার সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সামরিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই বেসামরিক মহড়াটিও ভবিষ্যতের সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ভারতের জন্য অনেক কার্যকর হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এই ধরণের মহড়া ভারতে প্রথম নয়। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ও নাগরিকদের এমন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তারপর প্রায় ৫৫ বছর পর ফের দেশবাসীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন