
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের স্ত্রী অনামিকা গৌতমের সম্পত্তি গত কয়েক বছরে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। সম্প্রতি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। কংগ্রেস শিবিরের অভিযোগ, ২০০৯ সালে অনামিকা গৌতমের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা। যা ২০২৪ সালে বেড়ে হয়েছে ৩১ কোটি টাকার বেশি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাথে জানান, লোকপালের কাছে নিশিকান্ত দুবের স্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি সংক্রান্ত এক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর ধরে অনামিকা গৌতমের ঘোষিত আয়ের সঙ্গে সম্পত্তি বৃদ্ধির কোনো মিল নেই।
শ্রীনাতে জানান, “২০২৫ সালের ২৪ মে লোকপালের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ২৪ জুলাই লোকপাল নিশিকান্ত দুবেকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দেয়।”
কংগ্রেসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে অনামিকা গৌতমের অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৫০ লক্ষ টাকা এবং স্থাবর সম্পত্তি কিছুই ছিল না। ২০১৪ সালে অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে দাঁড়ায় ১.০৩ কোটি টাকা এবং স্থাবর সম্পত্তি হয় ৫.৫৩ কোটি টাকা।
২০১৯ সালে অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে হয় ৩.৭২ কোটি টাকা এবং স্থাবর সম্পত্তি বেড়ে দাঁড়ায় ৯.৩৫ কোটি টাকায়। মোট সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩.০৬ কোটি টাকায়। ২০২৪ সালে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ আরও বেড়ে প্রায় ৩১.৩২ কোটি টাকায় পৌঁছায়।
শ্রীনাতে বলেন, "এটি স্পষ্টতই অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পত্তি বৃদ্ধি এবং ভয়ঙ্কর দুর্নীতিরই ইঙ্গিত দেয়। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে দুবের লোকসভা সদস্যপদও চলে যেতে পারে"। তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নিশিকান্ত দুবে, তাঁর স্ত্রী বা বিজেপির তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সাংবাদিক সম্মেলনের ভিডিও শেয়ার করে শ্রীনাতে লেখেন, "নিশিকান্ত দুবে সম্পর্কে দুটি অত্যন্ত সন্দেহজনক বিষয় রয়েছে:
⦁ নিশিকান্ত দুবের স্ত্রীর আয়ের বাইরে সম্পত্তির উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
⦁ তার স্ত্রীর ঋণদাতা জানিয়েছেন, "আমি কখনও কোনও ঋণ দিইনি।"
নিশিকান্ত দুবে একজন জনপ্রতিনিধি। তার উত্তর দেওয়া উচিত।"
শ্রীনাতে আরও বলেন, "এটি লক্ষণীয় যে এই সাংসদ, যিনি প্রায়শই বিরোধীদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করতে অভ্যস্ত। কিন্তু যখন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তখন কেন এই নীরবতা? "
উল্লেখ্য, বিতর্কিত মন্তব্য বা কাজ করার জন্য রাজনৈতিক মহলে সুপরিচিত নিশিকান্ত দুবে। গত আগস্ট মাসে দেওঘরে বাবা বৈদ্যনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে জোরপূর্বক প্রবেশের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নিশিকান্ত-সহ ন'জন বিজেপি সাংসদ জোরপূর্বক দেওঘর বিমানবন্দরের ‘এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল’-এ ঢুকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের হুমকি দিয়ে রাতেই চার্টার্ড বিমান উড়ানের অনুমতি দিতে বাধ্য করেছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন