নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বিহারে কোনও অভিযোগ জমা দেননি। রবিবার কমিশনের সেই দাবি খারিজ করে কংগ্রেস (Congress) নেতা পবন খেরা (Pawan Khera) এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) চলাকালীন দলের বুথ লেভেল এজেন্টরা (BLA) অনিয়মের ৮৯ লক্ষ অভিযোগ জমা দিয়েছিল, কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেইসব অভিযোগের সবগুলিই খারিজ করে দিয়েছে।
রবিবার পাটনায় (Patna) এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা বলেন, “নির্বাচন কমিশন তার সূত্রের মাধ্যমে বারবার খবর পাচ্ছে যে কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ আসছে না। কিন্তু সত্যি হল যে কংগ্রেস SIR-এর অনিয়ম সম্পর্কিত ৮৯ লক্ষ অভিযোগ কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে।”
এদিন তিনি আরও বলেন, “যখন আমাদের BLA অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিল, তখন কমিশন তাদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। নির্বাচন প্যানেল আমাদের BLA-দের স্পষ্টভাবে বলেছে যে অভিযোগ শুধুমাত্র ব্যক্তিদের দ্বারা গ্রহণ করা যেতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা নয়।”
পবন খেরা বলেন, কংগ্রেস দাবি করছে যে পুরো SIR কার্যক্রম পুনরায় পরিচালনা করা হোক। তিনি আরও বলেন, SIR-এ ব্যাপক অনিয়ম নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, “আমাদের BLO-রা যেসব ভোটারের নাম মুছে ফেলা হয়েছে তাদের অভিযোগ এবং আপত্তি দায়ের করার ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখেননি এবং সমস্ত আবেদন সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার (DEO) কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।”
পবন খেরা জানান রাজ্যের ৯০,৫৪০টি বুথ থেকে নির্বাচন কমিশন বিহারের ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। অভিবাসনের কারণে ২৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, ২২ লক্ষ মৃত মানুষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে এবং প্রদত্ত ঠিকানায় অনুপস্থিত থাকার কারণে ৯,৭০,০০০ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, ১০০ জনেরও বেশি নাম বাদ দেওয়া বুথের মোট সংখ্যা ২০,৩৬৮টি এবং ২০০ জনেরও বেশি নাম বাদ দেওয়া বুথের সংখ্যা ১,৯৮৮টি। ৭,৬১৩টি এরকম বুথ আছে যেখানে ৭০ শতাংশেরও বেশি মহিলাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৬৩৫টি এরকম বুথ আছে যেখানে অভিবাসী মানুষদের বাদ দেওয়া নামের মধ্যে ৭৫ শতাংশেরও বেশি মহিলা। তিনি আরও বলেন যে, এই পরিসংখ্যান যাচাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পবন খেরার অভিযোগ অনুসারে, এমন অনেক ঘটনা আছে যেখানে একজন ভোটারকে দুটি এপিক (EPIC) নম্বর দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে সেইসব তথ্য আছে এবং এখন এই সত্য অস্বীকার করা যাবে না। আমরা আশা করি যে আমরা যে তথ্য দিয়েছি তা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক যাচাই করা হবে এবং এর তদন্ত করা হবে। এই ভুলগ সংশোধন করার জন্য আবার ঘরে ঘরে গিয়ে যাচাই করার প্রয়োজন রয়েছে।”
তবে কংগ্রেস নেতার সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়। কংগ্রেসের আনা অভিযোগ অস্বীকার করে কমিশন জানিয়েছে, “আজ পর্যন্ত, বিহারের ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কোনও জেলা সভাপতি কর্তৃক অনুমোদিত কোনও বিএলএ নির্ধারিত নিয়ম মেনে ১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকার কোনও নাম নিয়ে কোনও দাবি (ফর্ম ৬) বা আপত্তি (ফর্ম ৭) জমা দেয়নি।”