
* এনডিএ শিবিরে এখনও মেলেনি আসন রফার সূত্র।
* মোট ৭৫ আসনের দাবিতে অনড় চিরাগ পাসোয়ান, জিতন রাম মাঝি ও উপেন্দ্র কুশহাওয়ার দল।
* ছোটো শরিকদের তুষ্ট করার পরেই আসন রফা নিয়ে আলোচনা করবে বিজেপি, জেডিইউ।
জট কাটছে না কিছুতেই এনডিএ-তে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তিন ছোটো শরিককে মানাতে পারেনি এনডিএ শিবির। বিশেষ করে এলজেপি (রামবিলাস) নিজেদের ৪০ আসনের দাবিতে এখনও অনড়। অন্যদিকে উপেন্দ্র কুশহাওয়ার দল এবং জিতন রাম মাঝির দলের দাবি যথাক্রমে ২০ ও ১৫ আসন। এই পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লীতে এলজেপি (রামবিলাস) প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষে নিত্যানন্দ রাই।
আসন রফার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার সকালেই পাটনায় জরুরি বৈঠকে বসেছে এলজেপি (রামবিলাস) নেতৃত্ব। এই বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরুণ ভারতী। বৈঠকে উপস্থিত আছেন রাজ্য সভাপতি রাজু তিওয়ারী। এদিনও চিরাগ পাসোয়ান জানিয়েছেন, আসন বন্টন নিয়ে আলোচনা চলছে। আজ তিনি আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
এনডিএ-র এই অভ্যন্তরীণ বিবাদের পরে জেডিইউ এবং বিজেপি ঠিক করেছে তিন ছোটো জোট শরিকের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত করার পরেই নিজেদের আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করবে দুই দল। এই তিন শরিককে আসন ছাড়ার পর যা আসন বাকি থাকবে তা দুই শরিকের মধ্যে ৫০-৫০ হারে ভাগ করা হবে।
সূত্র অনুসারে, তিন ছোটো শরিকের আচরণে ক্ষুব্ধ জেডিইউ ও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও তারা আশাবাদী যে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে সমস্ত সমস্যা মিটে যাবে এবং সমঝোতা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। যদিও ২৪৩ আসনের মধ্যে থেকে তিন ছোটো শরিকের দাবি মত ৭৫ আসন কোথা থেকে দেওয়া হবে তা স্পষ্ট নয়।
বিহার বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা ২৪৩। এর মধ্যে ৭৫ আসন ছেড়ে দিলে বাকি থাকে ১৬৮ আসন। এই আসন বিজেপি ও জেডিইউ-এর মধ্যে ৫০-৫০ হারে ভাগ হলে দুই দলের ভাগে পড়ে ৮৪ করে আসন। এনডিএ-র প্রধান দুই শরিক দল এখনও পর্যন্ত এই ভাগাভাগি মেনে নেবে বলে জানায়নি। কারণ এই দুই দল ১০১ ও ১০২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক। রাজনৈতিক মহলের মতে আসন ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েনে পরিস্থিতি খুব জটিল হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (রামবিলাস), জিতন রাম মাঝির হ্যাম এবং উপেন্দ্র কুশহাওয়ার আরএলএম – কেউই নিজেদের আসনের দাবি থেকে পিছু হটতে রাজি নয়। রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জন, তলায় তলায় জোট গড়ে নির্বাচন লড়া যায় কিনা সেই বিষয়ে চিরাগ পাসোয়ান ও প্রশান্ত কিশোর আলোচনা চালাচ্ছেন। যদিও প্রশান্ত কিশোর এই ধরণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও জিতন রাম মাঝি জানিয়েছেন, কমপক্ষে ১৫ আসন তাঁকে না দেওয়া হলে তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতা না হবার কারণে এককভাবে লড়াই করে এলজেপি। যদিও সেবার এনডিএ-র এই শরিক দল বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু জেডিইউ-র বিরুদ্ধে প্রতিটি কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছিল। ১৩৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেবার এলজেপি পায় মাত্র ১ আসন। অন্যদিকে এলজেপি-র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ে জেডিইউ থেমে যায় ৪৩ আসনে। যা বিগত দু’দশকে জেডিইউ-র সর্বনিম্ন আসন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন