“বিহারে এর আগে বুথ লুঠ হত। এখন অমিত শাহ এখানে প্রার্থী লুঠ করার নতুন অভ্যাস চালু করেছেন।” শুক্রবার পশ্চিম চম্পারণে এক জনসভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা জানান জন সূরজ পার্টির প্রধান প্রশান্ত কিশোর। এর আগেই পিকে-র দলের তিন প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করেন পিকে।
গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পিকে জানান, আমাদের তিন চার জন প্রার্থীকে লুঠ করা হয়েছে। যদিও গোপালগঞ্জে আমরা অন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিহারের মানুষ বাকি সিদ্ধান্ত নেবেন। জানা গেছে, গোপালগঞ্জ আসনে জন সূরজ পার্টির প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় ওই কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী অনুপ শ্রীবাস্তবকে সমর্থন করবে জন সূরজ পার্টি।
গতকাল জন সূরজ প্রধান আরও বলেন, এই গুজরাটিরা দিল্লিতে বসে বিহারের ভবিষ্যৎ ঠিক করছেন। যাতে বিহার শুধুমাত্র শ্রমিক যোগানোর কারখানা হিসেবেই থেকে যায়। বিহারের মানুষ শ্রমিকই থেকে যাবে আর গুজরাটিরা কারখানার মালিক হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রসঙ্গে প্রশান্ত কিশোর বলেন, বিহারে ছট পুজোর সময় ১২ হাজার ট্রেনের বন্দোবস্ত করবেন বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। বিহারের মানুষ লাঠিচার্জের শিকার হয়েছে। দেশজুড়ে বিহারের মানুষকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে, ট্রেনে তাদের বাথরুমে বসতে বাধ্য করা হয়েছে।
এদিন পিকে দাবি করেন, বিজেপি চাইছে জন সূরজ প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দিতে। তাই তিন আসনে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করে তিনি বলেন, দানাপুর, গোপালগঞ্জ এবং ব্রহ্মপুর আসনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ, ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্ব জন সূরজ প্রার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তাদের মনোনয়ন জমা না দিতে অথবা মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলা হচ্ছে।
গত ২১ অক্টোবর এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশান্ত কিশোর অভিযোগ করেন, জন সূরজের তিন প্রার্থী - দানাপুরের মুতুর শাহ, ব্রহ্মপুরের সত্যপ্রকাশ তিওয়ারি এবং গোপালগঞ্জের শশী শেখর সিনহা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির হুমকি ও প্রলোভনের মুখে মনোনয়ন তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে পিকে অভিযোগ করেন, “গত কয়েক বছরে বিজেপি এমন ভাবমূর্তি তৈরি করেছে যে, যেই জিতুক, সরকার গঠন করবে বিজেপি-ই। এখন তারাই ভয় পেয়েছে। জন সূরজকে ‘ভোট কাটার দল’ বলে যারা উপহাস করেছিল, আজ সেই দলের ত্রাসে রয়েছে এনডিএ।”
২১ অক্টোবর সাংবাদিক সম্মেলনে কিশোর জানিয়েছেন, ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) হেরে যাবার ভয়ে ভীত। তাই হুমকি দিয়ে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। দেশে এই ধরণের কোনও নজির ছিলনা।”
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন