
কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার ধর্মস্থলে 'গণকবর' মামলায় নয়া মোড়। ভুয়ো তথ্য প্রদান করে তদন্তকারী অফিসারদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল মূল অভিযোগকারী সেই সাফাইকর্মীকেই। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয়েছে ওই সাফাইকর্মীকে। আজ সন্ধ্যায় পেশ করা হবে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে।
১৯৯৮ থেকে ২০১৪ - ১৬ বছর ধরে একের পর এক ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটেছে কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার ধর্মস্থলে। কখনও নির্যাতিতাদের দেহ সরাসরি কবর দেওয়া হয়েছে আবার কখনও দেহ পুড়িয়ে তারপর কবর দেওয়া হত। নিহতদের মধ্যে ছিল নাবালিকাও। গত মাসে ওই শিবমন্দিরের প্রাক্তন সাফাইকর্মী এমনই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন থানায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছিল উত্তেজনা।
ওই সাফাইকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল SIT গঠন করা হয়। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে সাফাইকর্মীর দেখানো ১৫টিরও অধিক জায়গায় মাটি খোঁড়া হয়েছে। কেবল একটি জায়গায় একটি কঙ্কাল ও কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়। এরপরেই সাফাইকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে বিশেষ তদন্তকারী দল। শনিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করা হবে তাঁকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই কঙ্কালটি নকল ছিল। অভিযোগকারী নিজেই এই ব্যবস্থা করেছিলেন যাতে এটি পুলিশের সামনে তার দাবিকে শক্তিশালী করার জন্য প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে।
এর আগে, এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে অভিযোগকারী জানিয়েছিলেন, ক্ষয়, বন বৃদ্ধি এবং নির্মাণ কাজের কারণে কিছু সমাধিস্থল হারিয়ে গেছে। তিনি আরও দাবি করেছিলেন, স্থানীয়রা দিনের বেলায় তাকে মৃতদেহ কবর দিতে দেখেছে। কিন্তু কেউ আটকায়নি।
এরই মাঝে এক মহিলাও দাবি করেছিলেন ধর্মশালা থেকে তাঁর মেয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। যদিও পরে তিনিও সেই দাবি থেকে সরে এসেছেন।
সম্প্রতি এক মহিলা নিজেকে অভিযোগকারীর স্ত্রী হিসেবে দাবি করে বলেছিলেন, ‘ও ভালো মানুষ নয়। ১৯৯৯ সালে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। আমরা প্রায় সাত বছর সংসার করেছিলাম। ও আমার সন্তানদের মারধর করত। মনে হয় অর্থের লোভে মিথ্যে কথা বলছে ও।’ অভিযোগকারীর এক বন্ধুও দাবি করেছেন, ‘গণ কবর’ সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে।
এই সমস্ত কিছু মিলিয়ে তদন্তকারী অফিসারদের মনে অভিযোগকারীর দাবি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। এরপরই তাঁকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতে তদন্তকারীরা আরও নিশ্চিত হন যে সমস্ত অভিযোগ ভুয়ো। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন