
ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বাঘেলের ছেলে চৈতন্য বাঘেলকে গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। তাঁর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিযোগ, চৈতন্য বাঘেল একটি বৃহৎ আবগারি দুর্নীতির সাথে জড়িত, যেখানে কর ফাঁকি, লাইসেন্স দুর্নীতি এবং আর্থিক লেনদেনের অসংগতি রয়েছে।
শুক্রবার সকালে ভিলাই শহরে বাঘেল পরিবারের বাসভবনে তল্লাশি অভিযানে আসে ইডি। কিছুক্ষণ তল্লাশির পর গ্রেফতার করা হয় চৈতন্যকে। জানা গেছে, এর আগে একই বাড়িতে মার্চ মাসে অভিযান চালিয়েছিল আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই সময় তদন্তের বিষয় ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল-এর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ‘মহাদেব বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কারি’।
ইডি আরও জানায়, মদের ব্যবসায় যুক্ত একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে চৈতন্যের। তাঁদের কাছ থেকে অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন তিনি। ইডি-এর দাবি, এইসব অর্থ কালো টাকা হিসেবে বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট ও হাওয়ালা লেনদেনের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা হয়েছিল।
চৈতন্য বাঘেলের জন্মদিনেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনাকে ইঙ্গিতপূর্ণ আখ্যা দিয়ে কটাক্ষ করেন ভূপেশ বাঘেল। এক্স হ্যান্ডেলে ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “বিশ্বের কোনো গণতন্ত্রে মোদী ও অমিত শাহর মতো জন্মদিনের উপহার কেউ দিতে পারেন না। আমার জন্মদিনে আমার উপদেষ্টা এবং দুই ওএসডির বাড়িতে ইডি পাঠানো হয়েছিল। আর আজ আমার ছেলে চৈতন্যর জন্মদিনে আমার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধন্যবাদ, আমি এই উপহার আজীবন মনে রাখব।”
পরে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, 'ভূপেশ বাঘেল না টুটেগা, না ঝুঁকেগা' অর্থাৎ ভূপেশ বাঘেল ভাঙবেন না, মাথা নতও করবেন না।
চৈতন্যের গ্রেফতারির খবর সামনে আসতেই ছত্তিশগড় বিধানসভায় শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। কংগ্রেস বিধায়করা স্পিকারের টেবিল ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন। পাশাপাশি কেন্দ্রের ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তদন্ত’-এর অভিযোগ তোলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্পিকার অধিবেশন সাময়িকভাবে মুলতুবি ঘোষণা করেন।
কংগ্রেস সহ বিরোধীরা বহুদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে, ইডি, সিবিআই এবং আয়কর বিভাগের মতো সংস্থাগুলি বিজেপি সরকারের নির্দেশে বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগেই। ছত্তিশগড়ের এই ঘটনা বিরোধীদের সেই অভিযোগেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, “আইন তার নিজস্ব পথে চলছে। কেউ যদি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তদন্ত হবেই। এতে রাজনীতি টেনে আনা উচিত নয়”।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন