
বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে দিল্লির বসন্তকুঞ্জে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant Workers) হেনস্থা করার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee)। বাংলাভাষী বলেই তাঁদের উপর অত্যাচার হচ্ছে বলে সুর চড়ালেন তিনি। এর বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি দিল্লির বসন্তকুঞ্জে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, তাঁদের কখনও জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, কখনও আবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ করলেন মমতা ব্যানার্জি।
নিজের এক্স মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “নয়াদিল্লির বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনি থেকে উঠে আসা একের পর এক ভয়ঙ্কর হেনস্তার ঘটনার খবর শুনে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও বিচলিত। এই বসতি মূলত সেই বাংলাভাষী মানুষেরা তৈরি করেছেন, যাঁরা দিল্লিকে গঠন করার অসংগঠিত শ্রমশক্তির গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ”।
বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি লেখেন, “শোনা যাচ্ছে, বিজেপি পরিচালিত সরকারের নির্দেশে তাঁদের জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে এবং ইলেকট্রিসিটি মিটার তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে”।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগও নিজের সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা নিজেদের টাকায় যে প্রাইভেট জলের ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করেছিলেন, তা দিল্লি পুলিশ এবং আরএএফ-এর সহায়তায় আটকে দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে একপ্রকার জবরদস্তি উচ্ছেদ চলছে... আশ্রয়, জল ও বিদ্যুৎ, এই মৌলিক অধিকারগুলো যদি এইভাবে পদদলিত করা হয়, তাহলে আমরা কীভাবে নিজেদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র বলে দাবি করব?”
পাল্টা পশ্চিমবঙ্গে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের চিত্রটাও তুলে ধরেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গে ১.৫ কোটিরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন, যারা সম্মানের সঙ্গে বসবাস করেন। কিন্তু বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে সেই কথা জোরের সঙ্গে বলা যায় না, যেখানে বাংলাভাষীদের নিজের দেশেই অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেউ বাংলায় কথা বললে, তিনি বাংলাদেশি হয়ে যান না। ভাষা নির্বিশেষে তাঁরা ভারতেরই নাগরিক, যেকোনো ভারতীয় নাগরিকের মতোই সমান অধিকারসম্পন্ন”।
বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা ব্যানার্জি লেখেন, “গুজরাট, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা ও মধ্যপ্রদেশ থেকে বাংলাভাষীদের উপর নিপীড়ন করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখন সেই বিদ্বেষের ছায়া এসে পড়েছে দেশের রাজধানীতেও। বাংলা সমস্ত নির্যাতিত কণ্ঠের পাশে দাঁড়াবে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সর্বত্র আওয়াজ তুলব”।
যদিও মমতা ব্যানার্জির সমস্ত অভিযোগ ভুয়ো বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, বিদ্যুৎ চুরি সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার জন্যই সেখানে গিয়ে দুটি বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিতে হয়েছিল। এর বেশি কিছু করা হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন