যৌন হেনস্থার মামলায় অবশেষে আদালতের ‘হিটলিস্ট’-এ জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিং। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের একাধিক আন্তর্জাতিক স্তরের মহিলা কুস্তিগিরের করা যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে আগামী ১৮ জুলাই তাকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাইস অ্যাভিনিউ কোর্ট।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এই মামলায় যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বলেই জানিয়েছে আদালত। দেশের হয়ে বিশ্ব মঞ্চে পদকজয়ী কুস্তিগিরদের আন্দোলন নিয়ে গোটা দেশ তোলপাড় হয়ে যাওয়ার পরেই এই মামলা নিয়ে সজাগ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
চলতি বছরের শুরুর দিকে জাতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন সাক্ষী মালিক-ভিনেশ ফোগটের মতো ভারতের হয়ে কমনওয়েলথ ও অলিম্পিক্সে পদকজয়ী মহিলা কুস্তিগিররা।
প্রথমদিকে সরকার তাঁদের অভিযোগে আমল না দিলে তাঁরা দিল্লির যন্তরমন্তরে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। কুস্তিগিররা একসঙ্গে ধর্নাতেও বসেন। তাদের এই আন্দোলন নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। ধীরে ধীরে সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে টনক নড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের।
এরপর সাক্ষী, ভিনেশ, সঙ্গীতা, বজরং পুনিয়ারা তাদের অলিম্পিক্স ও কমনওয়েলথের পদক গঙ্গায় ভাসিয়ে দিতে চাইলে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর তড়িঘড়ি কুস্তিগিরদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
এই বৈঠকের পরেই গত ১৫ জুন ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে প্রায় দেড় হাজার পাতার এক চার্জশিট ফাইল করে দিল্লি পুলিশ। ওই চার্জশিটে ৬ বারের সাংসদ ব্রিজভূষণের নামে যৌন হেনস্থা, ভীতি প্রদর্শন ও বিব্রত করার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। এমনকি এক নাবালিকা কুস্তিগীরের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্রিজভূষণের নামে পকসো আইনের আওতায়ও মামলা দায়ের করা হয়। দিল্লির রাইস অ্যাভিনিউ কোর্টে জমা দেওয়া ওই চার্জশিটের সঙ্গে একাধিক তথ্য-প্রমাণও জমা দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি সাংসদ ইতিমধ্যেই একটি বিবৃতি জারি করেছেন। তাঁর তরফের আইনজীবী জানিয়েছেন, ব্রিজভূষণ পুলিশকে সবরকম সহায়তা করবেন এবং আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন। উল্লেখ্য, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমপক্ষে ৩ বছরের হাজতবাসের সাজা হতে পারে ব্রিজভূষণের।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন