
গুজরাট হাইকোর্ট থেকে ফের অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু আশারাম বাপু। তিন মাসের জন্য নতুন করে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়েছে। ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আশারামকে চিকিৎসার কারণে এই জামিন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, সুপ্রিম কোর্ট ৭ জানুয়ারি একটি ধর্ষণা মামলায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিল। বর্তমানে তিনি রাজস্থানের যোধপুরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সোমবার আশারামের তিন মাসের জামিনের মেয়াদ শেষ হবে। সেই কারণেই তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আরও তিন মাসের জামিন চেয়ে আবেদন করেন। বিচারপতি ইলেশ জে ভোরা এবং বিচারপতি সন্দীপ ভট্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদনের শুনানি হয়।
শুনানির পর বিচারপতি ভোরা জামিনের পক্ষে রায় দিলেও, বিচারপতি ভট্ট ভিন্নমত প্রকাশ করেন এবং আবেদনটি খারিজ করে দেন। ফলে বিষয়টি তৃতীয় বিচারপতি এ এস সুপেহিয়ার সামনে উপস্থাপিত হয়।
আশারামের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট শালিন মেহতা আদালতে যুক্তি দেন যে, ৮৬ বছর বয়সী আশারাম হৃদরোগ ও কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এবং তার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি হলো আয়ুর্বেদিক 'পঞ্চকর্ম'। যোধপুর-ভিত্তিক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাকেন্দ্রে তার চিকিৎসা সবে মাত্র শুরু হয়েছে এবং পুরো প্রক্রিয়ার জন্য আরও তিন মাস সময় লাগবে।
আইনজীবী আরও উল্লেখ করেন, জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট জামিনের আদেশ দেওয়ার সময় গুজরাট হাইকোর্টে নতুন করে আবেদন করার ছাড়পত্র দিয়েছিল। তবে একটি ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেও তাকে রাজস্থানের যোধপুর ধর্ষণ মামলায় জামিন নিতে হবে, অন্যথায় ১ এপ্রিল তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হবে।
গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট হার্দিক দাভে আদালতে যুক্তি দেন যে, যদিও রাজ্য আশারামের চিকিৎসার বিরোধিতা করছে না, তবে আদালতকে যাচাই করতে হবে যে সত্যিই তার জামিনের প্রয়োজন আছে কি না।
আদালতের রেকর্ড পর্যালোচনার পর বিচারপতি সুপেহিয়া আশারামের আরও তিন মাসের জন্য জামিন মঞ্জুর করেন। তিনি জানান, আশারাম এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ হননি এবং পূর্ববর্তী জামিনের অপব্যবহারও করেননি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে স্বঘোষিত ধর্মগুরু আশারাম বাপুর বিরুদ্ধে নিজেরই আশ্রমের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রাজস্থানের জয়পুর আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তার। এরপর ২০২২ সালে প্রথম বার রাজস্থান হাইকোর্টে জামিনের আর্জি জানান তিনি।
২০২৩ সালে উচ্চ আদালত সেই আবেদন খারিজ করলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সে বছরই সুরাটের এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে আশারামের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বরে তার জামিনের আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত। এরপর চলতি বছরের শুরুতে দুই মামলাতেই জামিন পান তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন