

সোমবার আরও একবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর সমন এড়িয়ে গেলেন রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানি (Anil Ambani)। এক দীর্ঘস্থায়ী ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (FEMA) সংক্রান্ত মামলায় ব্যক্তিগতভাবে তিনি হাজির হতে চাননি। এর আগেই ইডি-র তরফ থেকে তাঁর ভার্চুয়াল সাক্ষ্যদানের অনুরোধ খারিজ করা হলেও এদিন ফের তিনি "ভার্চুয়াল উপস্থিতি বা রেকর্ড করা ভিডিও" এর মাধ্যমে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা বলেছেন। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইডির সমন এড়ালেন তিনি।
২০১০ সালে শুরু হওয়া এই তদন্ত মূলত জয়পুর-রিঙ্গাস হাইওয়ে প্রকল্প (Jaipur-Reengus Highway Project) নিয়ে, যা রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট এবং কনস্ট্রাকশন (ইপিসি) চুক্তি। সূত্র অনুসারে, ফেমার অধীনে বৃহত্তর দেওয়ানি মামলার অংশ হিসেবে ইডির তদন্তে এর আগে সুরাট-ভিত্তিক শেল কোম্পানিগুলির মাধ্যমে দুবাইতে ৪০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ উঠেছিল, যা ৬০০ কোটি টাকারও বেশি আন্তর্জাতিক হাওলা নেটওয়ার্কের দিকে ইঙ্গিত করে। সম্প্রতি অর্থ পাচার বিরোধী আইনের অধীনে আম্বানির ৭,৫০০ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার পর এই ঘটনাগুলি ঘটেছে।
অনিল আম্বানির এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, হাইওয়ে চুক্তিটি সম্পূর্ণরূপে দেশীয়, কোনও বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াই এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং জে আর টোল রোডটি সম্পূর্ণরূপে তৈরি হবার পর ২০২১ সালে ভারতের জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ২০০৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একজন নন-এক্সিকিউটিভ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী অনিল আম্বানি কখনও রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের দৈনন্দিন ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত ছিলেন না এবং এখানে যে অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে সেই সময় তিনি বোর্ড সদস্যও ছিলেন না।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যক্তির জবানবন্দি রেকর্ড করেছে ইডি। এর মধ্যে যারা হাওলা কার্যক্রমে জড়িত বলে অভিযোগ তারাও আছেন। গ্রুপ কোম্পানিগুলির সাথে জড়িত ১৭,০০০ কোটি টাকার ব্যাংক জালিয়াতির সাথে যুক্ত একটি পৃথক আর্থিক জালিয়াতি মামলায় এর আগে অনিল আম্বানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
সূত্র অনুসারে, গত ১৪ নভেম্বর শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এজেন্সির দিল্লি অফিসে হাজিরা দেননি রিলায়েন্স এডিএজি গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানি এবং তখনই ভার্চুয়াল মোডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
১৪ নভেম্বর তলব করা হলেও অনিল আম্বানি ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হননি। ইডি আধিকারিকদের মতে, তাঁর কাছ থেকে অনলাইনে মামলায় যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করে একটি ইমেল পাওয়া গেলেও সংস্থা ভার্চুয়াল মোডে হাজিরার অনুমতি দেবে না।
এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতি অনুসারে, অনিল আম্বানি জানিয়েছিলেন, তিনি "ভার্চুয়াল ভাবে হাজিরা দিতে" প্রস্তুত এবং "সব বিষয়ে ইডিকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন"।
অন্যদিকে লাইভ ল’র এক প্রতিবেদন অনুসারে রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানি কর্তৃক দায়ের করা মানহানির মামলায় কোবরাপোস্ট, ইকোনমিক টাইমসের প্রকাশক বেনেট, কোলম্যান অ্যান্ড কোং লিমিটেড এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে এদিনই সমন জারি করেছে। যে প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে যে তাদের কোম্পানিগুলি ৪১,০০০ কোটি টাকারও বেশি জালিয়াতি করেছে। তবে আদালত এই প্রতিবেদন নিষিদ্ধ করার কোনও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়নি। কারকারডুমা আদালতে সিনিয়র সিভিল জজ বিবেক বেনিওয়াল এই মামলার শুনানি করেন।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন