
১৭,০০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির মামলায় রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানিকে (Anil Ambani) তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। আগামী ৫ আগস্ট দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই ব্যবসায়ীকে।
অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন (PMLA)-এর আওতায় তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। এই তদন্তের অংশ হিসেবে সংস্থাটি গত সপ্তাহে দিল্লি ও মুম্বই মিলিয়ে প্রায় ৩৫টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। যেগুলি অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে। পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হয়েছে ৫০টিরও বেশি সংস্থার নথি। এখনও পর্যন্ত ২৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
একইসঙ্গে, একটি ভুয়ো ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি কেলেঙ্কারির তদন্তে তৎপর হয়েছে ইডি। ওড়িশা ও কলকাতায় তল্লাশি চালিয়েছে তারা। অভিযোগ, M/s Biswal Tradelink Pvt. Ltd. নামে ওড়িশা-ভিত্তিক একটি কোম্পানি রিলায়েন্স গ্রুপকে একটি প্রকল্পে চুক্তি পাইয়ে দেওয়ার জন্য ভুয়ো গ্যারান্টি দিয়েছিল।
এই মামলায় ভুবনেশ্বরের তিনটি ঠিকানা এবং কলকাতার একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। ইডি-র দাবি, এই কোম্পানি ও তাদের পরিচালকেরা ৮% কমিশনের বিনিময়ে ভুয়ো ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ইস্যু করতেন। অনিল আম্বানির কোম্পানির বিরুদ্ধে ভুয়ো বিল তৈরি ও বহু অপ্রকাশিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতি নিয়ে সেবি (SEBI), ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাঙ্ক (NHB), ন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি (NFRA) এবং ব্যাঙ্ক অফ বড়োদা (Bank of Baroda)-র মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানমূলক রিপোর্ট ED-র হাতে তুলে দিয়েছে। সেবির দেওয়া রিপোর্ট অনুসারে, রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স লিমিটেড (RHFL) ফার্মের কর্পোরেট ঋণ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ৩,৭৪২ কোটি টাকা থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮,৬৭০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
রিলায়েন্সের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, “রিলায়েন্স ইনফ্রা এই বিষয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি জনসমক্ষে সমস্ত তথ্য প্রকাশ করেছিল। সেবি নিজে থেকে কিছু আবিষ্কার করেনি।” তিনি দাবি করেন, সেবির দেওয়া তথ্যে ভুল আছে। ওই অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৫০০ কোটি টাকা।
ইডি ও সেবির এই যুগ্ম তদন্ত রিলায়েন্স গ্রুপের আর্থিক কার্যকলাপে বড় ধরনের অনিয়মের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনিল আম্বানির ৫ আগস্টের জিজ্ঞাসাবাদ আগামী দিনে এই কেলেঙ্কারিতে আরও নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আনবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন