
আরও বিপাকে রিলায়্যান্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানী (Anil Ambani)। ৩০০০ কোটি টাকা দেনার মামলায় লুক আউট সার্কুলার জারি হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। শুক্রবার ইডিকে উদ্ধৃত করে এমনই জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। মঙ্গলবার অনিল আম্বনির হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। তারপরই এই পদক্ষেপ নিয়েছে ইডি।
উল্লেখ্য, মামলা এড়াতে কেউ যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন, তার জন্যেই লুক আউট সার্কুলার জারি করা হয়। দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নৌবন্দর ইত্যাদির প্রবেশ এবং প্রস্থানপথের জন্য এই সার্কুলার জারি থাকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেখানেই যান, সেখানেই আধিকারিকেরা তাঁকে আটক করেন।
অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন (PMLA)-এর আওতায় তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। অভিযোগ, ২০০৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনিলের সংস্থা ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়ার সময় কোনো নিয়ম মানেনি। এমনকি ব্যাংক আধিকারিকদের আর্থিক সহ নানা সুবিধাও প্রদান করেচেন তিনি ঋণ অনুমোদনের জন্য। এই তদন্তের অংশ হিসেবে সংস্থাটি গত সপ্তাহে দিল্লি ও মুম্বই মিলিয়ে প্রায় ৩৫টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। যেগুলি অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে। পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হয়েছে ৫০টিরও বেশি সংস্থার নথি। এখনও পর্যন্ত ২৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতি নিয়ে সেবি (SEBI), ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাঙ্ক (NHB), ন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি (NFRA) এবং ব্যাঙ্ক অফ বড়োদা (Bank of Baroda)-র মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানমূলক রিপোর্ট ED-র হাতে তুলে দিয়েছে। সেবির দেওয়া রিপোর্ট অনুসারে, রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স লিমিটেড (RHFL) ফার্মের কর্পোরেট ঋণ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ৩,৭৪২ কোটি টাকা থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮,৬৭০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
অন্যদিকে, জানা যাচ্ছে, অনিল আম্বনির দেনাগ্রস্ত রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্সের (আরকম) ঋণ অ্যাকাউন্টকে স্টেট ব্যাঙ্ক ‘প্রতারক’ হিসেবে চিহ্নিত করতে চলেছে। গত ২৩ জুন এব্যাপারে আরকম-কে চিঠি পাঠিয়েছিল এসবিআই। সেই চিঠির কথা শেয়ার বাজারকে জানানোর পরে আজ তা প্রকাশ্যে এসেছে। অনিলের আইনজীবীর দাবি, আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করে ব্যাঙ্ক এই চিঠি পাঠিয়েছে। তিনি আইনি দিকটা খতিয়ে দেখছেন।
স্টেট ব্যাঙ্কের চিঠি অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে ৩১,৫৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল আরকম এবং তার শাখা সংস্থাগুলি। যা ঋণের শর্ত ভেঙে জটিল পথে ঋণের গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠানো হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন