
পাঞ্জাবে বিষ মদ খেয়ে মৃত্যু হল ২৭ জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও কয়েকজন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পাঞ্জাবের অমৃতসরের মজিথা এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের বেশিভাগই ভাঙ্গালি, কালান, থারিওয়াল, সাঙ্ঘা এবং মারারি কালান ব্লকের বাসিন্দা। নিহতদের বেশিরভাগই দিনমজুর। পুলিশ তদন্তে জানা গেছে এই মদ তৈরির জন্য অনলাইনে প্রচুর পরিমাণে মিথানল সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “এগুলি মৃত্যু নয়, এগুলি খুন”। নিরীহ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, এই ঘটনায় আপ সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রী এবং আবগারি মন্ত্রী হরপাল সিং চিমার পদত্যাগও দাবি করেছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যেই অমৃতসর জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলিতে মেডিক্যাল দল মোতায়েন করা হয়েছে। ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ গৌরব যাদব জানিয়েছেন, “মাজিথায় বিষ মদ কাণ্ডে পাঞ্জাব পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। বিষ মদ ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এই চক্রের মূল অভিযুক্ত-সহ ন’জন ব্যক্তি এবং বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে”।
তিনি আরও জানিয়েছেন, “ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং আবগারি আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মাজিথা সাব-ডিভিশনের ডিএসপি এবং মাজিথা থানার এসএইচওকে কর্তব্যে অবহেলার জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে”।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত প্রভজিৎ সিং, কুলবীর সিং, সাহেব সিং, গুরজন্ত সিং এবং নিন্দর কৌর। সাহেব সিং অনলাইনে মিথানলের অর্ডার দেন।
অমৃতসরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সাক্ষী স্বনী নিজে নজরদারি চালাচ্ছেন। মাজিথা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক আফতাব সিংহ বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় একটি জায়গা থেকেই মদ কেনা হয়েছিল। সেই মদ খেয়ে সোমবার সকালের মধ্যে কয়েক জনের মৃত্যু হয়। প্রশাসনকে না জানিয়েই স্থানীয়েরা মৃতদের শেষকৃত্য করে দেন। গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায়। পৌঁছে জানতে পারি, অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের গোপনে শেষকৃত্য করে দেওয়া হয়েছে”।
এর আগে গত বছর মার্চ মাসে সাংরু জেলায় বিষ মদ পান করে মৃত্যু হয় ২০ জনের। তার আগে ২০২০ সালে তারন তারান, অমৃতসর এবং বাটালায় বিষ মদের কারণে মৃত্যু হয়েছিল ১২০ জনের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন