
আমেরিকা থেকে অবৈধবাসীদের হাতে হাতকড়া, পায়ে শিকল পরিয়ে ভারতে ফেরত পাঠানো নিয়ে উত্তাল হয় সংসদ। বিরোধীরা এই ঘটনা নিয়ে লাগাতার আক্রমণ করে সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে। যদিও এটা নতুন বিষয় নয় বলেই জানান ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর দেওয়া তথ্যানুযায়ী ২০০৯ সাল থেকে এমন অবৈধবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে আমেরিকা।
বৃহস্পতিবার জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘বিতাড়িত অবৈধবাসীদের সঙ্গে যাতে কোনও দুর্ব্যবহার না করা হয় তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। বিদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া সকল দেশের কর্তব্য। এটি কোনও নির্দিষ্ট দেশের জন্য কার্যকরী নয়। শুধুই যে ভারতীয়দের জন্য এই নীতি তা নয়"।
তিনি আরও বলেন, 'এবছর ১০৪ জন সহ ২০০৯ সাল থেকে মোট ১৫,৯০৩ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে আমেরিকা ফেরত পাঠিয়েছে। অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের বিরোধী আমরাও। অবৈধ অভিবাসন নিয়ে আমরা যৌথ ভাবে কাজ করছি। তাছাড়া আমাদের নাগরিকদের মধ্যে যাঁরা অবৈধ চলাচলে যুক্ত তাঁরা নিজেরাই অন্যান্য অপরাধের শিকার হন।'
ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে ৭৩৪ জন, ২০১০ সালে ৭৯৯ জন, ২০১১ জন ৫৯৭ জন, ২০১২ সালে ৫৩০ জন, ২০১৩ সালে ৫৫০, ২০১৪ সালে ৭৯১, ২০১৫ সালে ৭০৮, ২০১৬ সালে ১,৩০৩ জনকে আমেরিকা থেকে ভারতে পাঠানো হয়েছিল। তাছাড়া ২০১৭ সালে ১০২৪ জন, ২০১৮ সালে ১১৮০ জন, ২০১৯ সালে ২০৪২ জন, ২০২০ সালে ১,৮৮৯ জন, ২০২১ সালে ৮০৫, ২০২২ সালে ৮৬২, ২০২৩ সালে ৬১৭, ২০২৪ সালে ১,৩৬৮ জন এবং ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ১০৪ জনকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার টেক্সাস থেকে ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা আমেরিকান সামরিক বিমান সি-১৭ বুধবার ভারতে নেমেছে। বুধবার যেসব অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে ২৫ জন মহিলা, ১২ জন নাবালক। জানা গেছে এঁদের মধ্যে ৪৮ জনের বয়স ২৫ বছরের কম। এঁদের অধিকাংশই জানিয়েছেন মাত্র দিন দশেক আগেই তাঁরা আমেরিকা পৌঁছেছিলেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁরা দাবি করেছেন আমেরিকান সামরিক বিমানে তাদের হাতকড়া এবং পায়ে বেড়ি পরিয়ে রাখা হয়েছিল। অমৃতসর নামার পর তাদের হাত-পায়ের শিকল খোলা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন