
তামিলনাড়ুর রাষ্ট্রায়ত্ব মদ বিপণন সংস্থা TASMAC-এ (তামিলনাড়ু স্টেট মার্কেটিং কর্পোরেশন) সাম্প্রতিক তল্লাশি অভিযান নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়লো ইডি। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে 'ইডি সমস্ত সীমা অতিক্রম করছে', যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।
প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, আপাতত ইডির পরবর্তী সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। পাশাপাশি আদালত ইডির অভিযানকে নিন্দা করে জানায়, "আপনি ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারেন, কিন্তু একটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে এভাবে অভিযান? এটা গ্রহণযোগ্য নয়।"
ইডির অভিযোগ, তামিলনাড়ুতে মদ সরবরাহ নিয়ে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে। এই দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। ১৪ মার্চ এবং ১৬ মে পর্যন্ত চালানো অভিযানে তারা নথি, মোবাইল ফোন এবং বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করার দাবি করেছে। গত ২৩ এপ্রিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট ইডি-কে তামিলনাড়ু স্টেট মার্কেটিং কর্পোরেশন-এর বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেয়। গত ২০ মে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তামিলনাড়ু সরকার।
তামিলনাড়ুর আবগারি মন্ত্রী এস মুথুস্বামি ইডির বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার’ অভিযোগ তোলেন। তিনি জানান, এই তল্লাশি অভিযান রাজ্য সরকারি কর্মকর্তাদের হয়রানি করার একটি মাধ্যম মাত্র এবং এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
ডিএমকে সরকার সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশকে স্বাগত জানিয়েছে। রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ আরএস ভারতী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানান, 'এটা রাজ্য সরকারকে কলঙ্কিত করার প্রচেষ্টার ওপর একটি কড়া আঘাত।'
বিজেপির পক্ষ থেকে এই ঘটনায় পাল্টা আক্রমণ করেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি কে আন্নামালাই। তিনি তামিলনাড়ুর মন্ত্রী ভি সেন্থিল বালাজিকে এই দুর্নীতির ‘মূলচক্রী’ বলে কটাক্ষ করেছেন। যদিও মন্ত্রী বালাজি এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “TASMAC-এ সবকিছু স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়। আমাদের ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হিসাব নির্ভর এবং নিয়ম মেনে চলে।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হয়েছে। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে যার যথেষ্ট প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন