

মঙ্গলবার সংসদে পেশ হয় ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত ১২৯তম সংবিধান সংশোধনী বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিল। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল লোকসভায় এই বিল পেশ করেন। তবে আরও আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংসদের জেপিসি বা যৌথ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে বিলটি। ৩ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে বলে সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার ই-ভোটিং-এ বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ২৬৯ এবং বিলের বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৯৮। এই প্রথম নতুন লোকসভায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং ব্যবহৃত হয়। আলোচনার জন্য বিলটি পাঠানো হয়েছে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে। সূত্রের খবর, এই কমিটিতে লোকসভার ২১ জন এবং রাজ্যসভার ১০ জন সদস্য থাকবেন। এই কমিটির সদস্যদের চূড়ান্ত করবেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। লোকসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে সিদ্ধান্ত সরকার পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
যৌথ সংসদীয় কমিটির মেয়াদ আপাতত ৯০ দিনের জন্য নির্ধারিত। ৩১ জন সদস্য বিল দু’টিতে কোনও সংশোধন বা সংযোজন প্রয়োজন কি না, তা খতিয়ে দেখবেন। প্রয়োজনে কমিটির সময়সীমা বৃদ্ধি পেতে পারে। এর পরে বিলটি লোকসভা ও রাজ্যসভায় ভোটাভুটির জন্য পেশ করা হবে। দু’কক্ষেই বিল পাশ হওয়ার পর নিয়মানুযায়ী পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য। রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।
উল্লেখ্য, ‘এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে বিজেপি। সংসদে যাতে বিলটি সহজেই পাশ করানো যায় সেদিকেই লক্ষ্য রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। বিল পাশ হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের প্রয়োজন বিজেপির। যা সরকারের কাছে নেই। বিরোধীরা যাতে বিলটি নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করতে না পারে সেই কারণেই যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
এই বিল নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানাচ্ছে বিরোধী ইন্ডিয়া মঞ্চ। তাদের দাবি এই নীতি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী। সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কেন্দ্র অতিরিক্ত তৎপরতা দেখাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, কেন্দ্র বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার স্পিকারদের মতামত ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করবে। অর্থাৎ এখনই বিলটি আইনে পরিণত হবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের মত।
প্রসঙ্গত, সরকারিভাবে নতুন এই বিল-এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘কনস্টিটিউশন (ওয়ান হান্ড্রেড অ্যান্ড টুয়েন্টি নাইনথ অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল’। যে বিলে একইসাথে লোকসভা এবং বিভিন্ন বিধানসভার নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন টেরিটরিস ল’জ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৪ নামের আরও একটি বিল আনার কথা বলা হয়েছে। যে বিলে জম্মু ও কাশ্মীর, পুদুচেরি এবং দিল্লির নির্বাচন একসঙ্গে করার কথা বলা হচ্ছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন