

ইন্ডিগোর বিমান বাতিলের জেরে দেশজুড়ে ব্যাহত হয়েছে বিমান পরিষেবা। গত ৪৮ ঘন্টায় মোট ১,৩০০ বিমান বাতিল হয়েছে বলে খবর। যার জেরে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বহু যাত্রী। কেউ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিতে পারেননি তো কেউ নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানেই যোগ দিতে পারেননি।
শুক্রবার ইন্ডিগো প্রায় ৬০০টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। যার ফলে দিল্লি বিমানবন্দর নিশ্চিত করেছে যে আজ মধ্যরাত পর্যন্ত সমস্ত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার ও বুধবার মিলিয়ে ২০০টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল। গত ৪৮ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ১,৩০০টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ইন্ডিগো জানিয়েছে, ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক নাও হতে পারে।
দিল্লিতে শুক্রবার ২২৫টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। মুম্বই বিমানবন্দরে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১০৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়। দিল্লি, মুম্বইয়ের পাশাপাশি প্রভাব পড়েছে দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরগুলিতেও। বেঙ্গালুরুতে ১০২টি ফ্লাইট বাতিল, হায়দরাবাদ ৭৫টি, কলকাতা ৩৫টি, চেন্নাই ২৬টি (৬টা পর্যন্ত) এবং গোয়া বিমানবন্দরে ১১টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ইন্ডিগো প্রতিদিন ২,২০০-এর বেশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে, তাই এই ব্যাপক বাতিলকরণে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
ডিজিসিএ (DGCA) ইতিমধ্যেই দেশের প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে পরিদর্শন শুরু করেছে এবং ইন্ডিগোর কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। বিমান সংস্থাটি ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত নতুন ঘোষিত FDTL (Flight Duty Time Limit) নিয়ম থেকে ছাড় চেয়েছে, যাতে তারা আরও পাইলট ও ক্রু নিয়োগের সময় পায়। ওই নিয়মে বলা হয়েছিল, প্রতি সপ্তাহে পাইলট এবং বিমানকর্মীদের বিশ্রামের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে মাত্র ২টি বিমান রাতে অবতরণ করাতে পারবেন এক জন পাইলট (আগে সংখ্যাটা ছিল ৬)।
বিপুল বিমান বাতিলের কারণে যাত্রীদের অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে একাধিক বিমান সংস্থা টিকিটের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তুলনামূলক কম খরচের স্পাইসজেট একক সেক্টরের ফ্লাইটে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে, যেখানে সাধারণত ভাড়া থাকে ৫০০০ থেকে ১২,০০০।
এয়ার ইন্ডিয়ার ভাড়াও রেকর্ড ছুঁয়েছে। হায়দরাবাদ থেকে মুম্বই যাওয়ার দুই স্টপেজের ইকোনমি টিকিটের দাম ছিল ৭০,৩২৯ টাকা। হায়দরাবাদ থেকে ভোপাল যাওয়ার একটি সংযোগকারী ফ্লাইটের ভাড়া পৌঁছেছে ৯০,০০০ টাকায়।
বিমান পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কারণে যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে বিমান সংস্থাটি। ইন্ডিগোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, "আমাদের প্রত্যেক গ্রাহককে বলছি - আমরা সত্যিই দুঃখিত এবং আমরা আপনাদের খেয়াল রাখব। আমরা গভীরভাবে ক্ষমাপ্রার্থী এবং বুঝতে পারছি যে গত কয়েকদিন আপনাদের অনেকের জন্য কতটা কঠিন ছিল। যদিও এই সমস্যার সমাধান দ্রুত হবে না। আমরাও চাইছি যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক"।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন