

ক্ষমতায় এলে ১ কোটি সরকারি চাকরি, এক কোটি মহিলাকে ‘লাখপতি দিদি’ হিসাবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি! তেজস্বী যাদবদের মহাগঠবন্ধনের ইস্তেহারের পাল্টা ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিল বিহারের ক্ষমতাসীন এনডিএ সরকার। মহিলা থেকে বেকারত্ব - সব দিক তুষ্ট করার মরিয়া প্রচেষ্টা নীতিশ-নাড্ডাদের ইস্তেহারে।
আর মাত্র সপ্তাহখানেক বাকি বিহারের প্রথম দফার নির্বাচনের। তার আগে শুক্রবার নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করল ক্ষমতাসীন এনডিএ শিবির। এদিন পাটনায় একজোটে 'সংকল্প পত্র' প্রকাশ করলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতিশ কুমার। এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জোটসঙ্গী এলজেপি (রামবিলাস)-র প্রধান চিরাগ পাসওয়ান।
এদিনের ইস্তেহারে নীতিশ কুমারের প্রতিশ্রুতি, ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলে এক কোটি যুবক-যুবতীতে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। প্রতিটি জেলার যুবকদের দক্ষতা নিরূপণে চালু হবে ‘স্কিল সেন্সাস’। পাশাপাশি, প্রতিটি জেলায় গড়ে তোলা হবে আধুনিক মেগা স্কিল সেন্টার, যাতে বিহার হয়ে ওঠে একটি ‘গ্লোবাল স্কিলিং হাব’। খেলাধুলার ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে তৈরি হবে ‘বিহার স্পোর্টস সিটি’ ও একাধিক সেন্টার অব এক্সেলেন্স।
পাশাপাশি মহিলা স্বনির্ভরতার উপরও জোর দিয়েছে এনডিএ। মুখ্যমন্ত্রীর মহিলা কর্মসংস্থান প্রকল্প-এর আওতায় প্রতি মহিলাকে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এর লক্ষ্য একটাই, এক কোটি মহিলাকে ‘লাখপতি দিদি’ হিসেবে গড়ে তোলা, যাতে তাঁরা বছরে অন্তত এক লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন। আরও উচ্চাভিলাষী প্রকল্প ‘মিশন কোটিপতি’-এর মাধ্যমে তৈরি করা হবে মহিলা কোটিপতি উদ্যোক্তাদের নতুন প্রজন্ম।
পাশাপাশি ইস্তেহারে রয়েছে কৃষকদের জন্য বড় প্রতিশ্রুতি। বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধির অধীনে কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে কৃষকদের বার্ষিক ৯ হাজার টাকা করে সাহায্য করা হবে। কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
এছাড়া পরিকাঠামো খাতেও ব্যাপক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নীতীশ কুমাররা। এনডিএ সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, ক্ষমতায় ফিরলে রাজ্যে ৩৬০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৭টা এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হবে। চার শহরে মেট্রো এবং আরও তিনটি বিমানবন্দর হবে। রাজ্যকে শিল্পোন্নত করতে ৫০ লক্ষ কোটির বিনিয়োগ টানারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাক্ষেত্রেও এসেছে বড় ঘোষণা। গড়ে তোলা হবে একটি ‘এডুকেশন সিটি’, যেখানে বিশ্বের নামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্যাম্পাস থাকবে। গরিব পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘কেজি থেকে পিজি’ পর্যন্ত বিনামূল্যে ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। স্কুলে মিড ডে মিলের পাশাপাশি দেওয়া হবে পুষ্টিকর প্রাতঃরাশ।
এছাড়া তফসিলি জাতির ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রতিটি মহকুমায় আবাসিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। উচ্চশিক্ষায় থাকা তফসিলি জাতি শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে ২,০০০ টাকা সহায়তা এবং চরম অনগ্রসর শ্রেণী (ইবিসি) শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক অনুদান থাকবে।
সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও বিশেষ জোর দিয়েছে নীতিশ কুমাররা। মা সীতার জন্মস্থানকে বিশ্বমানের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে, নাম হবে ‘সীতাপুরম’। পাশাপাশি, গড়ে উঠবে বিষ্ণুপদ ও মহাবোধি করিডর, রামায়ণ, জৈন, বৌদ্ধ ও গঙ্গা সার্কিট।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন
