

বিহারে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করল মহাগঠবন্ধন। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই ইস্তেহারের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘তেজস্বী প্রাণ’ (Tejashwi’s Vow)! ইস্তেহারে মহিলাদের মাসিক আড়াই হাজার টাকা, বিনামূল্যে ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ এবং পরিবার পিছু একটি করে চাকরির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
মহাগঠবন্ধনের ‘সংকল্প পত্র ২০২৫’-এর স্লোগান ‘সম্পূর্ণ বিহার কা সম্পূর্ণ পরিবর্তন, তেজস্বী প্রতিজ্ঞা, তেজস্বী প্রাণ’। যার প্রচ্ছেদে রয়েছে তেজস্বীর মুখ। মহাগঠবন্ধনের দাবি, ক্ষমতায় আসার ২০ দিনের মধ্যেই নতুন আইন আনা হবে। এর ফলে পরিবার পিছু একজন করে চাকরি পাবে এবং এই চাকরি বন্টন শুরু হবে ক্ষমতায় আসার ২০ মাস পর।
এছাড়া রাজ্যের সব চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্স কর্মীদের স্থায়ী করা হবে। জীবিকা (স্বনির্ভর গোষ্ঠী) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত মহিলাদের সরকারি কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মাসে ৩০,০০০ বেতন দেওয়া হবে। তেজস্বী যাদব বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু সরকার গঠন নয়, নতুন বিহার গড়া। এই ‘সংকল্প পত্র’ সেই নতুন যাত্রার প্রতিশ্রুতি।”
জনকল্যাণমূলক দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে মহাগঠবন্ধনের ইস্তেহারে। প্রতিটি পরিবারকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য ৫০০ টাকাতে গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া স্মার্ট মিটারের ত্রুটিজনিত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস এবং সেগুলি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের কথাও ইস্তেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
নারী কল্যাণে ঘোষিত হয়েছে ‘মাই-বহিন মান যোজনা’। যার আওতায় রাজ্যের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা মাসে পাবেন ২৫০০ টাকা অর্থাৎ বছরে ৩০,০০০ টাকা। এছাড়া ব্যক্তি পিছু স্বাস্থ্য খাতে ২৫ লক্ষ টাকা, বিধবা ভাতা এবং বরিষ্ঠ নাগরিক পিছু মাসিক দেড় হাজার টাকা (যা প্রতি বছর ২০০ টাকা করে বাড়বে) এবং বিশেষ ভাবে সক্ষমদের ৩ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
পুরনো পেনশন স্কিম (OPS) পুনরায় চালুর অঙ্গীকার করেছে মহাগঠবন্ধন। একই সঙ্গে প্রতিটি উপ-বিভাগে একটি করে মহিলা কলেজ এবং যেখানে ডিগ্রি কলেজ নেই, সেই ১৩৬টি ব্লকে নতুন কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনাও ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ফি সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং পরীক্ষাকেন্দ্রে বিনামূল্যে যাতায়াতের ব্যবস্থারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
মহাগঠবন্ধন জানিয়েছে, রাজ্যে সমস্ত ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (MSP) নিশ্চিত করা হবে। স্থানীয় হাট ও মাণ্ডিগুলি পুনরুজ্জীবিত করা হবে এবং দলিত, তফসিলি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত করা হবে।
ইস্তেহারে আরও বলা হয়েছে— সংবিধানবিরোধী কোনও আইন আরোপ করা হলে তার প্রতিরোধ করা হবে, সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া ক্ষমতায় এলে ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাস্তবায়ন করা হবে না বলে জানিয়েছে মহাগঠবন্ধন। পাশাপাশি, বুদ্ধগয়া মন্দির পরিচালনা বৌদ্ধ সমাজের হাতে তুলে দেওয়ার অঙ্গীকারও করা হয়েছে।
কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেছেন, “বিহারে মহাগঠবন্ধনই প্রথম দল, যারা মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করেছে এবং প্রথম ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। এটাই প্রমাণ করে কারা সত্যিই বিহারের উন্নয়নে আগ্রহী।”
ভিআইপি প্রধান মুকেশ সাহানি, যাঁকে বিরোধী জোটের উপ-মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, বলেন, “আগামী ৩০-৩৫ বছর আমরা মানুষের সেবায় নিবেদিত থাকব। এনডিএর কোনও ‘সংকল্প’ নেই, কিন্তু আমাদের প্রতিজ্ঞা আছে।”
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন
